চট্টগ্রাম ব্যুরো : হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তারের সাজা খাটছেন মিনু। কুলসুম আক্তার নামে গত প্রায় তিন বছর ধরে চট্টগ্রাম কারাগারে জেল খাটছেন তিনি। বিষয়টি নজরে আনেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সকালে জেল সুপার অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার নজরে আনেন। আদালতের পেশকার মো. ওমর ফুয়াদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আদালতে জেলখানার ছবি সম্বলিত রেজিস্টার খাতা উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত মিনুসহ জেলখানার রেজিস্টার খাতা দেখে আদেশের অপেক্ষায় রেখেছেন।
পেশকার ওমর ফুয়াদ জানান, চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানার একটি হত্যা মামলায় আদালত যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদন্ড দেন কুলসুম আক্তারকে। আর মিনু কুলসুম আক্তার সেজে আদালতে আত্নসমর্পণ করে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে জেল খাটছেন গত ২ বছর ৯ মাস ধরে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৬ সালের জুলাইয়ে একটি বাসায় মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টস কর্মী কোহিনূর আক্তার পারভীনকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এরপর রহমতগঞ্জে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পারভিন আত্নহত্যা করেছে বলে দাবি করেন গার্মেন্টস কর্মী কুলসুম আক্তার। এরপর কোতোয়ালী থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়।
মামলায় পুলিশ দুই বছর তদন্ত শেষে রিপোর্ট দাখিল করলে তা হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। মামলা নম্বর ০৯(৭)০৬ ও জি আর-৪৫৯/০৬। মামলার দায়রা নম্বর ৫৯০/০৮। ২০১৭ সালের নভেম্বরে তৎকালীন অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এই হত্যা মামলায় আসামি কুলসুম আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন।
সাজার পরোয়ানামূলে কুলসুম আক্তারের বদলি মিনু ২০১৮ সালের ১২ জুন কারাগারে যান। কিন্তÍু গত ১৮ মার্চ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান নারী ওয়ার্ড পরিদর্শকালে মিনু কোনো মামলার আসামি নয় বলে নিশ্চিত হন।
সূত্রমতে, কারাগারের সংরক্ষিত হাজতি রেজিস্টার পর্যালোচনা করে দেখা যায় সূত্রস্থ মামলা সংক্রান্ত হাজতি নম্বর ১৫৭১৯/০৭, কুলসুম আক্তার, স্বামী-ছালে আহম্মেদ নামীয় বন্দি বিজ্ঞ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন হাজতের পরোয়ানামূলে গত ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর কারাগারে আসেন। কারাগারে প্রায় ১ বছর তিন মাস ছিলেন তিনি। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ চতুর্থ আদালত ২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জামিন মঞ্জুর করেন। ওই দিন কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন কুলসুম আক্তার। তিনি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার গৌরস্থান মাঝের পাড়া আহাম্মদ মিয়ার বাড়ির আনু মিয়ার মেয়ে। বর্তমান ঠিকানা কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জ সাঈদ ডাক্তারের ভাড়া বাড়ি।
সান নিউজ/আইকে