চট্টগ্রাম ব্যুরো : করোনা সংক্রমণ রোধে এবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তিন প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। ২৩ মার্চ মঙ্গলবার সকাল থেকে এসব চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
গণপরিবহনে যাত্রীদের মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে এসব চেকপোস্টে নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
তিনি বলেন, কোভিড ভ্যাকসিন কার্যক্রম সাফল্যের সঙ্গে শুরু হলেও অনেকে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে চট্টগ্রামে। গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৯৮৪ নমুনা পরীক্ষায় ২৭২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যা গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে চট্টগ্রামে এ যাবত সর্বোচ্চ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, টিকা নেয়ার পর মানুষ অসচেতন হয়ে পড়েছে। গণপরিবহন, বিনোদন কেন্দ্র, বিয়ে অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জনসমাগম বেড়েছে। এমনকি মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থবিধি মানার বিষয়ে অবেহলা করেছে। ফলে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে।
তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক মাস্ক পরিধানসহ শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সমুদ্র সৈকত, পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র ও অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পাশাপাশি মানুষের মাঝে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া সচেতনতা বাড়াতে মাইকিংয়ের পাশাপাশি নগরের স্টেডিয়াম, সিআরবি, বাদামতলী মোড়, বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক ও সি-বিচসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিএনসিসি, স্কাউট, রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড, রেড ক্রিসেন্ট ও এনজিও প্রতিনিধিদের স¤পৃক্ত করে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
সেই সাথে নগরীর সকল কমিউনিটি সেন্টার, হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে সামাজিক-রাজনৈতিক অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে ১০০ জনের অধিক অতিথির সমাগম নিষিদ্ধ করে মালিকদের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ও তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান পরিচালনা না করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সকল মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মেনে নামাজ আদায়ের বিষয়টি আগামী শুক্রবার জুম্মার খুৎবার আগে প্রচার করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া গণপরিবহনে যাত্রীদের মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে নগরীর সিটি গেইট, শাহ আমাত সেতু ও অক্সিজেন মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ২৩ মার্চ মঙ্গলবার সকাল থেকে এসব চেকপোস্টে কার্যক্রম চলছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, অসচেতনতার কারণে কোভিড পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। করোনা রোগীদের সুচিকিৎসায় আন্দরকিল্লা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল-২, হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৫০টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নির্দিষ্ট বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে ৬০-৭০টি আইসিইউ বেড রাখা হয়েছে। মুমুর্ষ রোগীদের জন্য চমেক হাসপাতালে ৮০টি, জেনারেল হাসপাতালে ৩০টি, বিআইটিআইডিতে ১০টি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ১০০টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে এগুলো ব্যবহার করা হবে।
সান নিউজ/আইকে