নিজস্ব প্রতিনিধি, পাবনা : পাবনার আটঘরিয়ায় হিন্দু পল্লীর বাসিন্দাসহ দুই গ্রামের মানুষের চলাচলের রাস্তা টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এতে এই রাস্তা দিয়ে দুই গ্রামের শতাধিক পরিবারের সদস্যরা চলাচল করতে পারছেন না। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
অভিযোগে জানা গেছে, আটঘরিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের দেবোত্তর মহল্লার হিন্দুপাড়া রাস্তা দিয়ে পাকিস্তান আমল থেকে মানুষের চলাচলের এই রাস্তা হঠাৎ করে গত সোমবার (২২ মার্চ) সকালে টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন ওরফে ইতু।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, তাদের বাপ-দাদার আমলের পূর্ব থেকে এই রাস্তা দিয়ে শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনই নয় দেবোত্তর গ্রামের এবং পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের শতশত মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। কিন্তু গ্রামবাসীকে না জানিয়ে সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন ওরফে ইতু আটঘরিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজিজুল গাফ্ফার, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা বলে পরিচিত জাহিদ হোসেন এর সহযোগিতায় তাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। এর ফলে চরম দুর্ভেগে পড়েছেন তারা।
দেবোত্তর হিন্দু পল্লীর বাসিন্দা শংকর কুমার, গোপন কুমারসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, সোমবার সকাল থেকে টিন দিয়ে বেড়া দেওয়া শুরু করেন তারা। কিন্তু তাদেরকে নিষেধ করার পড়েও তারা কোন কথাই রাখেননি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক গ্রামবাসীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতাকে হাত করে এই প্রভাবশালী মহল রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারিনি।
এ বিষয়ে প্রভাবশালী সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন ইতুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বাড়ির কেয়ারটেকার শাজাহান আলী বলেন, আমাদের জায়গায় আমরা ঘিরে নিয়েছি। এখানে রাস্তা দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজিজুল গাফ্ফার বলেন, ওই জমি মাপ হয়ে যাওয়ার পরে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। আমি বিস্তারিত জানি না। আমি কাউকে সহযোগিতা করিনি। তবে সেখানে রাস্তাটা দরকার। মেয়র সাহেবের সাথে বসে বিষয়টির সমাধান করে নেয়া যায় বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম রতন বলেন, রাস্তা ঘিরে দেওয়ার খবর আমার কাছে এসেছে। পৌরসভার প্রকৌশলীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিলো। তিনি রিপোর্ট দিলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের কেউ জড়িত থাকলে সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।
আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: ফুয়ারা খাতুন বলেন, মানুষের চলাচলের রাস্তা মালিকানা হলেও রাস্তা বন্ধ করতে পারবে না কেউ। তিনি বলেন, রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এটি আমি জানলাম। পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সান নিউজ/এসআর/এনকে