নিজস্ব প্রতিনিধি, মাগুরা : মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার দুটি গ্রামে সংখ্যালঘুদের উদ্দেশ্যে করে গত শুক্রবার রাতের আধারে উড়ো চিঠি পাঠিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ঘটনায় শ্রীপুর থানায় ২১ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় ইতিমধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে আটক ব্যক্তিরা কোনও সাম্প্রদায়িক উগ্রপন্থী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় ।
রোববার ( ২১ মার্চ ) সন্ধ্যায় এসব কথা জানিয়েছেন মাগুরার পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক ৪ ব্যক্তি হলেন শ্রীপুর উপজেলার চৌগাছি গ্রামের ইউসুফ বিশ্বাস ওরফে ইবনুল (৩৪), চর মহেশপুর গ্রামের কোরবান আলী (৩৬), দারিয়াপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান (৪৮) এবং কচুয়া গ্রামের মোস্তাকিম বিল্লাহ (২৮)।
তাদের মধ্যে ইউসুফ বিশ্বাস এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। অন্যরা সবাই চিঠিটি বিতরণের সঙ্গে জড়িত। আটককৃত ছাড়াও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আয়নান, সুরত আলী, মারুফ, নোমান খান, জিয়া শেখ, মিরাজ খান, সোহান খান, ইসমাইল শেখ, রিয়াজ, ওবায়দুল্লাহ, নিরব হোসেন, আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর, শাহাদত, কোরবান আলী, তাহাজ্জত, জহিরুল ইসলাম ও সালমান কে মামলায় আসামী করা হয়েছে। তাদেরকেও গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইউসুফ ঢাকা কলেজে পরিসংখ্যান বিভাগে স্নাতকের ছাত্র ছিলেন। কিন্তু স্নাতক শেষ না করেই তিনি ঢাকায় দুটি মাদ্রাসায় ধর্মীয় শিক্ষা নিতে শুরু করেন। পরে তিনি এলাকায় কৃষি কাজের পাশাপাশি স্থানীয়দের ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া এবং প্রচারের উদ্যোগ নেন।
শুক্রবার রাতে শ্রীপুর উপজেলার চর গোয়ালদহ ও মালাইনগর গ্রামে প্রায় অর্ধশত সংখ্যালঘু পরিবারের কাছে উড়ো চিঠি পাঠান তারা। হাতে লেখা সেই চিঠিতে মূর্তি পূজা ছেড়ে ইসলাম গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। শনিবার এলাকায় সমাবেশ করে এলাকাবাসীকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানান মাগুরা–১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর।
এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানা পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে কি না, তা জানতে রোববার সকালে একটি আদেশ দিয়েছেন মাগুরার একটি আদালত। রোববার বিকেলে শ্রীপুর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবা শারমীন আদেশ দেন।
পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম জানান, রোববার আটক ব্যক্তিদের কোনও সাম্প্রদায়িক উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এখনও পাওয়া যায়নি। তারা যে প্রচারপত্র বিলি করেছেন তাতে হিংসা, ক্রোধ বা আক্রমণাত্মক কোনও ভাষা ব্যবহার করা হয়নি। তবে রাতের অন্ধকারে নাম পরিচয় বিহীন প্রচারপত্রে কিছু কথা সংখ্যালঘু ব্যক্তিদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সান নিউজ/এসএ