নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলে বহুল আলোচিত মা-মেয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। চুরি করার উদ্দেশ্যে ঘরে প্রবেশ করে গভীর রাতে অঞ্জলী মালাকার (৩৫) ও তার মেয়ে পূজাকে (৮) প্রতিবেশী আমির হোসেন ও তার সহযোগীরা হত্যা করেছিলেন। এ কথা স্বীকারও করেছেন তারা।
শনিবার ( ২০ মার্চ ) রাতে নিজ কার্যালয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার উল্লেখ করেন, নিহত অঞ্জলী মালাকারের স্বামী সনজিত (৪০) গত ১৯ মার্চ বাহুবল মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর কবিরের উপর তদন্তের দায়িত্ব অর্পন করা হয়।
তদন্তকালে জানা যায়, সনজিত ঘটনার রাতে ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে সুনামগঞ্জে অবস্থান করছিলেন। ঘরে টাকা আছে জেনে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে একই ভবনের ২য় তলার ভাড়াটিয়া আমির হোসেন তার দুই সহযোগীসহ ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে ভবনের বিদ্যুতের লাইন কেটে দেয়। রাত ২টায় আসামিরা আমির হোসেনের ঘরে একত্র হয়।
রাত ৩ টায় আমির হোসেন তার সহযোগীসহ ভবনের ৩য় তলায় অঞ্জলী মালাকারের দরজায় গিয়ে ডাক দেয়। তিনি দরজা খুলে দিলে আসামিরা ঘরে ঢুকেই অঞ্জলীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে, গলা কেটে হত্যা করে।
এ সময় মেয়ে পুজা (৮) ঘুম থেকে উঠে কান্না করতে থাকলে তাকেও গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরে আসামিরা অঞ্জলীর ঘরে থাকা ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা, একটি এ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। আমির হোসেনকে যাতে সন্দেহ না করা হয়, সেজন্য নিজের বাম হাত কেটে জখম তৈরি করে এবং ডাকাতরা তাকে মেরে বাড়ির পাশের একটি জমিতে ফেলে রেখে গেছে, এমন নাটক সাজায়।
ঘটনাটি বিশ্বাস করানোর জন্য অজ্ঞান হওয়ার ভান করে জমিতে পড়ে থাকেন তিনি। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে তাকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আসামি আমির হোসেনের স্বীকারোক্তিতে তদন্তকালে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মনির মিয়াকে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আসামিদের দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে ঘটনাস্থলের পাশে একটি ডোবা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোঁরা, লুন্ঠিত মোবাইল ফোন এবং কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়। অপর সহযোগী আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ।
গত বৃহস্পতিবার ভোরে অঞ্জলী ও তার মেয়ে পুজাকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
সান নিউজ/এসএ