নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে চন্দনা রানী পাল ও পুতুল রানী পাল (স্ত্রী ও শাশুড়ির) ওপর এসিড নিক্ষেপ করেছে ঘাতক স্বামী আনন্দ পাল (৪২)।
এসিডে চন্দনার মুখমণ্ডল, হাত ও বুক ও পিঠের কিছু অংশ এবং শাশুড়ির মুখমণ্ডল, হাত ও বুকের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ঘাতক স্বামী আনন্দ পাল পালিয়ে যায়।
আহত স্ত্রী-শাশুড়িকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ভাটামাথা গ্রামের কালিপদ পালের স্ত্রী পুতুল রাণী পাল (৫০) ও তার মেয়ে চন্দনা রানী পাল (৩০)।
চন্দনার বাবা কালিপদ পাল জানান, পুতুল পাল তার স্ত্রী ও চন্দনা তার মেয়ে। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে তার মেয়ে চন্দনা পালকে ঢাকার তাঁতী বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী নিতাই পালের ছেলে আনন্দ পালের কাছে বিয়ে দেওয়া হয়। তাদের পরিবারে ১০ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। আনন্দ পাল জুয়াড়ি প্রকৃতির লোক ছিল। এনিয়ে তাদের মধ্যে কলহ চলে আসছিল।
কালিপদ আরও বলেন, করোনার লকডাউনের মধ্যে আনন্দ পাল জুয়া খেলে অনেক টাকা ঋণ হয়ে যায়। তার বড় মেয়ের জামাইয়ের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা ও তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ব্যবসার জন্য নিয়েছিল। এনিয়ে চন্দনা পাল ও আনন্দ পালের মধ্যে কলহ চরম আকার ধারণ করে। পরে চন্দনাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসি। প্রায় এক বছর যাবত চন্দনা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার ভাটামাথা গ্রামে তার বাড়িতে থাকছেন। ইদানীং স্বামী আনন্দ পাল ফোনে ঢাকায় চলে যাওয়ার জন্য চন্দনাকে চাপ দিয়ে আসছিল। কিন্তু ঢাকা দেয়নি বলে আনন্দ পাল কাউকে কিছু না জানিয়েই শুক্রবার সকালে শ্বশুরবাড়িতে ব্যাগে কাপড় নিয়ে বেড়াতে আসেন। আসার পর চন্দনাকে ঢাকায় ফিরে যেতে চাপ দেয়।
তখন চন্দনা জানায়, আনন্দ পাল ঋণ শেষ করার পর সে শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাবে। এ নিয়ে আনন্দ পাল মারধোর করে চন্দনাকে, পরে তার কাপড়ের ব্যাগ থেকে বোতল দিয়ে আনা এসিড নিক্ষেপ করে চন্দনার উপর। এসময় চন্দনা চিৎকার করে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তার মা পুতুল পাল আসলে, তার উপরও মেয়ের জামাই আনন্দ পাল এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। পরে তাদের দুইজনকে উদ্ধার করে এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, আমরা এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে- এমন একটি তথ্য পেয়েছি। বিষয়টি জানতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত জেনে বলা যাবে।
সান নিউজ/এনআই/কেটি