নিজস্ব প্রতিনিধি, রাঙামাটি : রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় পরীক্ষামূলক সূর্ষমূখী চাষে সফলতার সম্ভবনা রয়েছে। তাই চাষীর মূখে হাঁসি দেখা যাচ্ছে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভগের গবেষণা ও পরামর্শক্রমে সূর্ষমূখী চাষ পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথম বাঘাইছড়িতে শুরু করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় যদিও এই সূর্ষমূখী চাষ করতে দেখা গেছে তবে রাঙামাটিতে এই প্রথম হচ্ছে সূর্ষমূখী চাষ।
সূর্ষমূখী চাষের পদ্ধতি হলো- সূর্ষমূখী দানাগুলো পানিতে ১-২ রাত ভিজিয়ে রাখতে অংগুর গজালে ১২-১৪ ইঞ্চি দূরে দূরে সার বদ্ব করে চারার মত রোপন করতে হয়।এভাবে যে যত পরিমান জায়গায় চাষ করতে ইচ্ছুক সে পরিমান চারা রোপন করদেত পারবে। তবে বাঘাইছড়ি উপজেলার রুপকারি ইউনিয়নের মগবান এলাকার স্নেহাংসু চাকমা ৩০ শতাংশ পতিত জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে সূর্ষমূখীর চাষ করেছেন।
মগবান এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও চাষী স্নেহাংসু চাকমা জানান, এই সূর্ষমূখী চাষ সম্পর্কে সে প্রথম গুগল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধারনা গ্রহন করে। পরে সেটি নিয়ে সে দীর্ঘ দিন গবেষণা করেন। তার পর বাঘাইছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসাণর অধিদফতরের অধীনেস্থ উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাও রুপকারি ইউনিয়ন মগবান ব্লকে কর্মরত কুন্তল রায় আমাকে চাষ করতে সহায়তা করেন।
চাষ উপযোগি জমি বাচাই ও বীজতলা তৈরি,সার কিটনাশক ও বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেন। আমি ৩০ শতাংশ পতিত জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে এই চাষ শুরু করেছি। তবে চাষে সফলতা পেলে আগামীতে নিজে চাষ করবো এবং প্রতিবেশীদের চাষ করতে উৎসাহিত করবো।
চাষী স্নেহাংসু চাকমা আরও বলেন,আমি গুগলে চার্জ দিয়ে সূর্ষমূখী তৈল সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জেনেছি।সূর্ষমূখী চাষে সফলতা বয়ে আনলে মানুষ আর সরিষার চাষ করবেনা। কারন সূর্ষমূখী তৈল সরিষার তৈলের চেয়ে অনেক গুন ভাল ও উপকারি। সূর্ষমূখী তৈল ব্যবহারে হার্ডের রোগ নিরাময় করে এছাড়াও ক্ষতিকার কোন উপসর্গ নেই সূর্ষমূখী তৈলে। প্রথম বারের মত ফলন মোটামোটি ভাল হয়েছে।
রুপকারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শ্যামল চাকমা বলেন, সূর্ষমূখী চাষ এ উপজেলাতে এই প্রথম দেখতে পেলাম আমরা। তাই অনেকে সূর্ষমূখী চাষ দেখতে দূর দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসে। আমার কাছে দেখতে ভাল লেগেছে তাই আমিও দেখতে এসেছি।এ চাষ যদি সফলতা বয়ে আনে তাহলে আগামীতে সবাইকে সূর্ষমূখী চাষ করতে উৎসাহিত করবো।
মগবান ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কুন্তল রায় জানান,জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর হতে প্রথম বারের মত প্রদর্শনীমূলক সূর্ষমূখী চাষ শুরু করেন।এটি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের একটি নতুন ও প্রদর্শনীমূলক সূর্ষমূখী চাষ। এই চাষে সফলতা দেখা দিলে আগামী চাষীদের চাষ করতে উৎসাহিত করবো।
তবে প্রথম চাষে ভাল ফলন দেখা গেছে। তার পরও চাষীকে আমরা বলেছি যদি সে বিক্রি করতে না পারে তাহলে কৃষি বিভাগ সূর্ষমূখী গুলো ক্রয় করে নেবেন। সূর্ষ মূখী তৈল স্বাস্থ্য সম্মত বলে বিজ্ঞানীরাও বলেছেন। এটা সরিষার চেয়েও অনেক ভাল। সূর্ষমূখী তৈল এখন বাজারেও পাওয়া যায়।তবে সরিষার তৈলের চেয়ে দাম একটু বেশী হতে পারে।
তিনি আরও জানান,প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় দেড় মেট্রিক টন সূর্ষমূখী উৎপাদন করা সম্ভব বলে মনে করেন।
সান নিউজ/কামাল/এসএ