নিজস্ব প্রতিনিধি, গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় দিনে দুপুরেই শহর রক্ষা বাঁধের সরকারি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মদদেই এসব ‘গাছ চুরির’ ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া উন্নয়নের নামে অপ্রয়োজনীয়ভাবে গাছ কাটা এবং সেসব গাছের বিক্রীত অর্থ ভাগবাটোয়ারা করার অভিযোগও উঠেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কিছু কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, বাঁধের দুপাশের মাটি আঁকড়ে ধরে থাকা একেকটি গাছের বয়স ৫ থেকে ১৫ বছর। গাছের রকম ভেদে একেকটির দাম ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক গাছ কেটে লুটপাট করা হয়েছে। পুরো বাঁধে নানা ধরনের ফলমূলের গাছ কাটা হয়। যেখানে ছিল বড় বড় আমের মুকুল ভরা গাছ, কাঠালের মুচি আসা গাছসহ নানা ধরনের বনজ ও ফলজ গাছ।
সরকারি জায়গায় বড় হওয়া এসব গাছ অনুমতি ছাড়া কাটা সম্পুর্ণ বেআইনি। কিন্তু টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যথাযথ নিয়ম অনুসারে উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে গাছ বিক্রির কথা থাকলেও, এখানে কোন টেন্ডার প্রক্রিয়াই করা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হটাৎ করেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন বাঁধে এসে সকল অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে মাইকিং করেন। তখন থেকেই যে যার মতো ঘর-বাড়ি সরানোর পাশাপাশি গাছ কাটা শুরু করেন এবং অনেক কম দামে ব্যাপারির কাছে সেই গাছ বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এখানে কোনো টেন্ডার নয়, কোনো লিখিত অনুমতি নয়, সরাসরি গাছ কেটে লুটপাট করেছে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট।
গাছ চুরির বিষয়টি বনবিভাগের কর্মকর্তা বছির আহমেদকে জানালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, আমরা আমাদের সমিতির তালিকাভুক্ত গাছগুলো নাম্বারিং করে দিয়েছি। বাকি গাছগুলো কেটে নিলামের মাধ্যমে বিক্রির উদ্যোগ নেবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি। সরকারি গাছ কোনভাবেই বিনামূল্যে বিতরণ কিংবা কেটে বিক্রি করার নিয়ম নেই। এ ব্যাপারে বনবিভাগের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে বনবিভাগকে গাছ কাটার জন্য একমাস আগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। উন্নয়ন কাজ যাতে বিলম্ব না হয়, সেকারণে বাঁধ এলাকায় মাইকিং করে সকল অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। গাছ লুটপাটের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।
সান নিউজ/এমএল/এনকে