নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে আলোচিত ধর্ষণ ঘটনার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে।
ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর সূত্রে জানা গেছে, আদালত স্থানান্তরের নির্দেশনা হওয়ায় মামলার কার্যক্রম মুলতবি রাখা হয়েছে। ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির দুটি পৃথক মামলা একসঙ্গে বিচারকার্য নিয়ে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনার জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম রোববার (৭ মার্চ) পর্যন্ত মুলতবি রাখা হয়েছিল।
আলোচিত মামলা হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা সম্প্রতি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় পরেরদিন সিলেটের শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর স্বামী। ওই সময় মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছিল ছয় আসামির। তারা হলেন- সাইফুর রহমান (২৮), তারেকুল ইসলাম (২৮), শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম (২৫)।
লিখিত এজহারে গৃহবধূর স্বামী উল্লেখ করেন, ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে প্রাইভেট কারে হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজারে যান। মাজার জিয়ারত শেষে সন্ধ্যায় এমসি কলেজের মূল গেটের সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে সিগারেট কেনার জন্য যান তিনি। গাড়ি থেকে নামার পরপরই আসামিরা তার স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। তিনি প্রতিবাদ করলে সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্কর তাকে চড়-থাপ্পড় মারে। তখন তার স্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে প্রতিবাদ করেন। এতে উপস্থিত আসামিরা ধমক দিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে ওই গাড়িতে উঠতে বলে।
এ সময় আসামি তারেকুল ইসলাম তারেক প্রাইভেটকারের চালকের আসনে বসে। তিনি ও তার স্ত্রী গাড়ির পিছনের সিটে উঠলে তার স্ত্রীর পাশে সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্কর বসে। আসামি মাহবুবুর রহমান রনি গাড়ির চালকের পাশের আসনে বসে। গাড়ি চালিয়ে এমসি কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণের ভেতর সাত নম্বর ব্লকের পাঁচতলা বিশিষ্ট নতুন বিল্ডিংয়ের সামনে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে খালি জায়গায় রাখা হয়। অন্য আসামিরা মোটরসাইকেল যোগে পেছনে পেছনে পৌঁছায়।
এরপর তারেকুল ইসলাম তারেক তার মানিব্যাগ থেকে ২ হাজার নিয়ে নেয়। এছাড়া সোনার গহনা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এসময় তার স্ত্রী চিৎকার করতে চেষ্টা করলে তার মুখ চেপে ধরে আসামিরা। স্ত্রীকে গাড়িতে তাকে এমসি কলেজ হোস্টেলের সাত নম্বর ব্লকের পাঁচতলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের সামনে পশ্চিম পাশে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত অনুমান ৮টায় তাকে আসামিদের সঙ্গে কথা বলায় ব্যস্ত রেখে সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, মাহবুবুর রহমান রনি ও অর্জুন লস্কর কারের ভিতরে পর্যায়ক্রমে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। এ সময় তিনি স্ত্রীর চিৎকার শুনে বাঁচাতে চাইলে অন্য আসামিরা তাকে আটকে রাখে। প্রায় আধা ঘণ্টা পর তার স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে আসলে আসামিরা তাকে প্রাইভেটকার রেখে স্ত্রীকে নিয়ে চলে যেতে বলে এবং ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে তাদের কাছ থেকে গাড়ি নিতে বলে। তিনি তখন স্ত্রীকে নিয়ে হেঁটে এমসি কলেজ হোস্টেল গেটে এসে সিএনজিতে অটোরিকশাতে করে টিলাগড় পয়েন্টে আসেন এবং পুলিশকে জানান।
মামলা দায়েরের পর এ পর্যন্ত এজাহারভুক্ত চারজনসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুম ও তারেকুল ইসলাম তারেক এখনও পলাতক রয়েছেন।
সান নিউজ/এসএস