নিজস্ব প্রতিনিধি, নরসিংদী : নরসিংদীতে দিন দিন বাড়ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। মুলত অল্প পুজি, কম পরিশ্রমে বেশি আয়ের ফলেই এখানে বৃদ্ধি পাচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ। এছাড়া শহরাঞ্চলে অনাবাদি জমির ব্যবহারেও ভূমি রাখছে বলে জানান কৃষিবিদরা।
সাবেক ঢাকা জেলার অর্ন্তগত বর্তমানে একটি পূর্ণাঙ্গ জেলা নরসিংদী। একদিকে এই জেলাটি যেমন শিল্পাঞ্চল হিসেবে খ্যাতি রয়েছে সারাদেশ তেমনিভাবে এ জেলার সাগরকলা, লেবু, শাকসবজি ও লটকের পর এবার সূর্যমুখী চাষেও খ্যাতি অর্জন করেছে নরসিংদী সহ আশপাশের জেলায়। কৃষি বিভাগ এ অঞ্চলের অনাবাদি জমিগুলোকে ব্যবহারের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
এরই অংশ হিসেবে নরসিংদী সদর উপজেলায় গত বৎসর মাত্র ২ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেন। আর পরীক্ষামূলকচাষে সফল হওয়ায় কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে সূর্যমুখী চাষের। যারফলে এবার শুধুমাত্র নরসিংদী সদর উপজেলায়ই প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ হয়েছে বলে জানান কৃষি বিভাগ।
সূর্যমুখী ফুলের বীজের মাধ্যমে যে পরিশোধিত তেল পাওয়া যায় তা পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। তবে কৃষকদের দাবী স্থানীয়ভাবে সূর্যমুখী ফুলের বীজের মাড়াই যন্ত্র না থাকায় কৃষকরা কিছুটা দ্বিদ্ধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
কৃষক সাইদুর রহমান শিমুল জানান, তিনি স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ছোটবেলা থেকেই কৃষি ও পশুর খামারের দিকে তার আগ্রহ। তাই তিনি গত বছর সামান্য কিছু জমিতে পরীক্ষামূলক সূর্যমুখীর চাষ করেন। ফলনও পান ভালোই। কিন্তু তিনি একটি বিষয়কেই সমস্যা মনে করেন সেটি হলো মাড়াই যন্ত্র না থাকলে দুরে অন্যজেলা থেকে তৈল করে আনতে গিয়ে খরচ হয় অনেক।
একই এলাকার আরেক কৃষক মাজহারুল হক বলেন, আমি দীর্ঘদিন কৃষি বিভাগের চাকরি করেছি। অনেক প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছি। অবসর জিবনে অনেক সময় পাচ্ছি বলে শহরের পাশে অনাবাদি থাকা জমিগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পনা মোতাবেক সরিষা শেষে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি।
ঢাকা থেকে ঘুরতে যাওয়া শিক্ষার্থী সুমাইয়া, লতা ও আসিফ জানায়, বাসা বাড়িতে বিভিন্ন ফুলের বাগান করা গেলেও সূর্যমুখী ফুলের বাগান করাটা খুব একটা হয়ে উঠেনা। এছাড়া একসঙ্গে অনেকগুলো সূর্যমুখী ফুল দেখে মনটা ভরে যায় তাই ঢাকা থেকে এখানে এসে বাগানটিও দেখা হলো এক বন্ধুর বাড়িতেও বেড়ানো হলো। তাদের মতো আশপাশের এলাকা থেকেও বাগান দেখতে ছুটে আসেন অসংখ্য সুর্ন্দয্যে পিয়াসুরা।
নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি উপ সহকারী কর্মকর্তা মো: আসাদুল হক বলেন, তৈলজাত ফসলের ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে আসছেন। তারই অংশ হিসেবে সরকারের প্রণোদনায় এই এলাকায় সূর্যমুখী চাষ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহুয়া শারমিন মুনমুন বলেন, অনাবাদি জমিগুলোকে ব্যবহারের লক্ষ্যে গত বছর পরীক্ষমূলকভাবে ২ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষের ফলন ভালো হওয়ায় এবার এই এলাকার কৃষকরা সূর্যমুখী চাষের দিকে আগ্রহ বাড়ছে। আশা করা যায় আগামীতে সূর্যমুখী চাষের পরিমান আরও বৃদ্ধি পাবে।
একদিকে কৃষি জমির যথাযথ ব্যবহার, অপরদিকে প্রকৃতিপ্রেমী সৌন্দর্য পিয়াসুদের বিনোদনের একটি মাধ্যম হয়ে কাজ করছে। তবে কৃষকদের যথাযথ সহায়তা আর বাজারজাত সহজ করতে পারলেই একে অর্থকরী ফসল অপরদিকে সৌন্দর্য পিয়াসুদের বিনোদনের একটি মাধ্যম হয়ে কাজ করতে পারে বলে সচেতন মহলের ধারনা।
সান নিউজ/রাসেল/এসএ