চট্টগ্রাম ব্যুরো : প্রতি বছর বর্ষায় সমুুদ্রের জলোচ্ছ্বাসে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে কপাল পুড়ে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার লাখো মানুষের। এখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) স্থায়ী বেড়িবাঁধে তারা স্বপ্ন দেখছেন বেঁচে থাকার। প্রায় ২৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁশখালী উপকূলজুড়ে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করছে পাউবো।
পাউবোর সাব ডিভিশনাল অফিসার প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা জানান, বাঁশখালীর স্থায়ী বেড়িবাঁধ প্রকল্পের প্রায় ৮৮ শতাংশের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারবো আমরা। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সমগ্র বাঁশখালী উপকুলীয় এলাকা সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পাবে। হবে না ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও প্রাণহানী।
তিনি জানান, প্রতি বছর বর্ষা ছাড়াও পুরো বাঁশখালী উপকুলীয় এলাকা জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকে। আর বর্ষায় হারাতে হয় ভিটেমাটি ও ফসলি জমি। ঘটে প্রাণহানীও। উপকুল রক্ষায় ২০১৫ সালে প্রায় ২০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় পাউবো। কিন্তু স্থানীয় দুস্কৃতিকারীদের বিভিন্ন বাঁধার কারণে প্রকল্পের কাজ ধীরগতি হয়ে পড়ে। ফলে ২০১৮ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।
তবে ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রকল্প কাজ দ্রুতগতি আসে। বর্তমানে এ প্রকল্পের প্রায় ৮৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকী ১২ শতাংশ কাজ দ্রুত শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি আমরা। তবে সময় ক্ষেপনের কারনে প্রকল্পে ব্যয় বেড়ে ২৯৩ কোটি টাকায় দাড়িয়েছে বলে জানান প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধে এখন ব্লক বসানোর কাজ চলছে। তাতে স্থানীয় লোকজন অত্যন্ত খুশি। বাঁশখালীর গন্ডমারা ইউপির বাসিন্দা মো, রফিক উদ্দিন বলেন, সমুদ্রের করাল গ্রাসে জীবন শেষ। এখন দেখছি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধে ব্লক বসছে। তাতে নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছি।
রফিক উদ্দিন বলেন, এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার জন্য আমরা সাগরের পাড়ে কতবারই না মানববন্ধন করেছি। সভা-সমাবেশ করেছি। শেষ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড এগিয়ে এসেছে। এই বেড়িবাঁধে বাঁশখালী উপকুলীয় এলাকার আর কোন জমি ও ঘরবাড়ি সমুদ্রে বিলিীন হবে না। দিতে হবে না প্রাণ। এটাই এখন বাঁশখালী বাসীর পরম পাওয়া।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, বাঁশখালীর প্রকল্পে কাজ বর্ষার আগে যতটুকু পরি শেষ করার চেষ্টা করছি। যেন বন্যায় ক্ষতি অনেকাংশে কমে যায়। সে জন্য প্রকল্প চলাকালে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কর্মস্থলে বসেই প্রকল্প তদারকি করছেন।
সান নিউজ/আইকে