নিজস্ব প্রতিনিধি, গাজীপুর: ট্রাক থেকে কাদা পানিযুক্ত মাটি পড়ছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। দেখে মনে হবে যেন বৃষ্টির পানিতে তৈরি হয়েছে কাদা। মাটি ব্যবসায়ীদের খামখেয়ালির কারণে বিভিন্ন কারখানার কাদা পানিযুক্ত মাটি বহন করে দিনের বেলাতেও মহাসড়কে চলাচল করছে ড্রাম ট্রাক। এতে মহাসড়কে দূরপাল্লার বড় বড় পরিবহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এবং দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার লোকজন।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এমসি বাজার থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার সড়কে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (৩ মার্চ) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এমসি থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার কাদাপানি যুক্ত মাটিতে সড়কের পড়ে একাকার। কাদার কারণে যান চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন মোটর সাইকেল চালকরা। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে তারা মোটর সাইকেল চালাচ্ছেন। যানবাহনের পাশাপাশি পথচারীদেরও চলাচলে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিন্ডিকেট মাটি বহন ব্যবসার সাথে জড়িত ফরিদপুর গ্রামের জালাল মিয়া, কাঞ্চন মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক, আবুল কাশেম ও তার ছেলে মনিরুজ্জামান মনিরসহ এলাকার আরো অনেকেই। তারা আর একে সিরামিক্স ও মীর-সিরামিক্স কারখানা থেকে কাদা পানিযুক্ত মাটি বহনের কারণে রাস্তায় চলাচলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি মাটি ব্যবসায়ীরা কোন প্রকার সমাধান করছে না। এতে এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিভিন্ন কারখানা থেকে কাদা মাটি আবাদি জমিতে শুকিয়ে মাটি সংগ্রহ করা হয়। অবৈধ যানবাহনে (ট্রাক্টর ও পাওয়ার ট্রিলার ট্রলি) ড্রাম ট্রাক দিয়ে সকাল থেকে এবং ভোর থেকে রাত পর্যন্ত অরক্ষিত অবস্থায় মাটি বহন করা হয়। এসব কাদা মাটি শুকানোর পর বালু-মাটি উড়ে ঘরের ভিতরে এবং খাবারে পড়ার পাশাপাশি পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ী মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ মানুষ এ অবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না।
মোকলেছুর রহমান বলেন, সড়কে কাদা মাটি পড়ার কারণে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী তেলের একটি ট্রাক জৈনা বাজার শিশুতোষ স্কুলের পাশে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ওপর উল্টে যায়। এতে আঞ্চলিক এবং মহাসড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস ট্রাকটি সরিয়ে দিলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
শ্যামলী পরিবহনের চালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মাওনা থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত আর একে সিরামিক্স কারখানার সামনে রাস্তার উপরে কাদা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ধীর গতিতে চালাতে হচ্ছে যানবাহন। চাকা পিছলে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)তাসলিমা মোস্তারীর বলেন, মাটি ব্যবসায়ী মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এলাকার মানুষের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। আইন লঙ্ঘন করে কেউ রাস্তায় মাটি বহন করলে উপজেলা প্রশাসনে খবর দেয়ার পাশাপাশি এলাকার মানুষকে প্রতিরোধ করতে হবে।
সান নিউজ/টিআইএস/কেটি