চট্টগ্রাম ব্যুরো : কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলাকায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নতুন ভবন উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘লেখক মুশতাক আহমেদ তার লেখনিতে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ কিংবা অন্যর বিশ্বাসের প্রতি আঘাত করেছিলেন। এজন্য অনেকেই তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। সম্প্রতি মামলার কারণে কাশিমপুর জেলখানায় অন্তরীণ ছিলেন তিনি। আইজি প্রিজন থেকে সংবাদ পেয়েছি মুশতাক আহমেদ হঠাৎ অসুস্থতা হয়ে পড়লে প্রথমে কারাগারের হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পান। পরে তাকে গাজীপুরের তাজউদ্দীন মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।’
তার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত হবে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সব মৃত্যুর বিপরীতেই তদন্ত হয়। একটা অস্বাভাবিক মৃত্যু অথবা স্বাভাবিক মৃত্যু বলেন, অনেক প্রশ্ন আসে। আমরা সেজন্য যেকোনো মৃত্যুর ঘটনা, তা কারাগারেই হোক অথবা দুর্ঘটনার কারণে হোক, ময়নাতদন্ত করে থাকি। ময়নাতদন্তের পর সঠিকভাবে বলতে পারব কেন মুশতাক আহমেদের মৃত্যু হয়েছে। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হবে। মৃত্যু তো কালকেই হলো। নিশ্চয়ই আমরা ব্যবস্থা নিবো।
তিনি বলেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এজন্য অনেকে অনেক কাজ করে যাচ্ছে। আল জাজিরা যে নিউজ দিয়েছে, দেশের মানুষ তা বিশ্বাস করে না। মানুষ ওই নিউজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কেন মিথ্যা নিউজ প্রচার করছে, তার উদ্দেশ্যটা কি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দেশের কেউ এর পেছনে জড়িত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, সমগ্র চট্টগ্রাম জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত অফিস স্থাপন করা হলো। বাংলাদেশ পুলিশ আজ অনেক সক্ষম। তাদের দক্ষতার কারণে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশে একটা শান্তির ফয়সালা করে যাচ্ছি। দেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে। তার সঙ্গে যদি সমান্তরালভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে না পারি, তাহলে সে উন্নতিটাও থমকে যাবে। সেজন্যই পুলিশ যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম, সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এ. বি. এম ফজলে করিম, মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী, আবু রেজা নদভী, চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের আনোয়ার হোসেন ও সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর ও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম রশিদুল হক।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলাকায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অবস্থান ছিল। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে আদেশ পায় গণপূর্ত অধিদপ্তর। চারতলা এই ভবন নির্মাণে বরাদ্দ ছিল ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে গণপূর্ত বিভাগ-২ এর অধীনে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হলে জেলা পুলিশের কার্যক্রম চলে যায় হালিশহর ছোটপুলের জেলা পুলিশ লাইনসে। এখনও পুলিশ লাইনের একটি ভবন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। উদ্বোধনের পর আবার আগের জায়গায় নতুন ভবনে কার্যক্রম চালু হবে।
সান নিউজ/এসএম