স্বপন দেব, মৌলভীবাজার : কয়েক বছর আগেও আমাদের দেশের মানুষের কাছে ব্রকলি সবজিটি সম্পর্কে স্বচ্ছ কোনো ধারণা ছিল না। অথচ এই শীতে এসে হঠাৎ এর কাটতি বেড়ে গেল। এখন বাজার ছেয়ে গেছে নানা আকারের ব্রকলিতে। কারণ, বাংলাদেশেই পর্যাপ্ত পরিমাণে চাষ হচ্ছে এই সবজি।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের উত্তর হিংগাজিয়া গ্রামের ইয়াসমিন বেগম (২০)। তিনি ব্রকলি সবজি চাষ করে এখন সফল চাষী। ফিরেছে সংসারে স্বচ্ছলতাও। কিশোরী ইয়াসমীন সিএনআরএস ‘সূচনা’ প্রকল্পের ওই এলাকার কিশোর কিশোরী ক্লাবের সদস্য।
জানা যায়, এনজিও সংস্থা সিএনআরএস ‘সূচনা’ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের পরামর্শ এবং তাদের দেয়া বীজ ও বিভিন্ন উপকরণ পেয়ে কিশোরী ক্লাবের ইয়াসমিন বেগম শুরু করেন শাক-সবজি আবাদ। বাড়ির সামনের প্রায় ১০ শতক জমিতে নতুন জাতের সবজি ব্রকলি চাষ করে এবার সফল হয়েছেন তিনি। এছাড়াও লালশাক, আলু, বেগুন, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, সিম, গাজর প্রভৃতি সবজি চাষ করে একজন সফল কৃষাণী হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছেন। কিশোরী ইয়াসমিনের সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই আজ এধরনের সবজি চাষে উদ্যোগী হয়েছেন।
সূচনা প্রকল্পের মনিটরিং অফিসার মনোজ কান্তি দাস ও সূচনা প্রকল্পের সিনিয়র টেকনিক্যাল অফিসার কৃষিবিদ মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ব্রকলি চাষের পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ তাই গ্রামীণ খামারিরা এ সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। ফলে এলাকার প্রায় ৬০ কৃষক-কৃষাণি এ সবজি চাষের অংশ নিয়ে সফলতা পেয়েছেন।
ইয়াসমিন বেগম জানান, সঠিক পরামর্শ ও সহযোগিতা পেলে যে কোন মানুষ লক্ষ্য অর্জন করতে পারে। আমি সূচনার অনুপ্রেরণায় সবজি চাষ শুরু করি। আজ এলাকার অনেকেই আমার সবজি ক্ষেত দেখতে আসেন এবং পরামর্শ নিয়ে সবজি চাষে উৎসাহী হচ্ছেন। এছাড়াও সূচনার কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়ে হাস-মুরুগ লালন-পালনও করছেন তিনি।
কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে সূচনা প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকার কৃষক-কৃষাণীকে নতুন নতুন জাতের সবজি বীজ দেওয়া হয়েছে। সূচনার পাশাপশি কৃষি অফিস থেকে তাদেরকে সবসময় প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে হিংগাজিয়া এলাকার ইয়াসমিন বেগম ব্রকলি চাষ করে বেশ সফলও হয়েছেন। তাদের দেখে অনেকেই এ সবজি চাষে এগিয়ে আসছেন।
সান নিউজ/কেটি