নিজস্ব প্রতিবেদক: পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে সান নিউজের নিহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের (২৮) লাশ বাড়িতে পৌঁছেছে।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাপরাশির হাটে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সমর্থক এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় লাশ বাড়িতে পৌঁছায়। লাশ দেখে বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন মুজাক্কিরের মা-বাবা, ভাই-বোনরা। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজন, সহকর্মী ও স্থানীয়রা।
নিহত মুজাক্কির অনলাইন পোর্টাল সান নিউজের নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াব আলী মাস্টারের ছেলে। সাত ভাই-বোনের মধ্যে মুজাক্কির সবার ছোট। এ বছর তিনি নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
নিহতের বাবা মাস্টার নোয়াব আলী জানান, রাত ৮টায় স্থানীয় আজগর আলী দাখিল মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। ছেলের দাফনের কথা বলে অঝোরে বিলাপ করে কাঁদতে থাকেন মুজাক্কিরের বাবা।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে আ.লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা ও উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে রয়েছেন- চরফকিরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, রুহুল আমিন, মেহরাব, বাপ্পী, কামাল পাটোয়ারী, শাওন, শামীম, দেলোয়ার হোসেন, মাস্টার, নসু, কামরুল হাসান, নুরুল অমিত, মাসুদ, কাঞ্চন, রায়হান, দেলোয়া, বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির’সহ অন্তত ৫০ জন। এদের মধ্যে সংবাদকর্মী বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির, নুরুল অমিত, ফরহাদ ও কাঞ্চন গুলিবিদ্ধ হয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বিকেল সাড়ে ৪টায় তার সমর্থকদের চাপরাশিরহাট দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলে। কিন্তু তার আগে চরফকিরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন লিটনের (মির্জা কাদের সমর্থক) নেতৃত্বে তার সমর্থকরা ওই কার্যালয়ে এসে উপস্থিত হয়। নির্ধারিত সময়ে বাদলের সমর্থকরা দলীয় কার্যালয়ে আসলে লিটনের সমর্থকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এর একপর্যায়ে উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির।
এদিকে, সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের মৃত্যুতে সান নিউজ পরিবার গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন ও তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
সান নিউজ/এসএস