নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী : নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে ডাকা হরতাল কর্মসূচি শেষ হয়েছে।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে হরতাল শেষে বসুরহাট পৌরসভার রুপালী চত্বরে ‘কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, বসুরহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন’ এর ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, গতকালের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে হামলাকারীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি। আজকে আমার সমর্থকদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। আমি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এ আক্রমণ সম্ভব নয়। এজন্য আমি মামলায় নোয়াখালীর ডিসি, এসপি, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি ও পরিদর্শক (তদন্ত) কেও আসামি করবো। এছাড়া ফেনীর এমপি নিজাম হাজারী, নোয়াখালীর এমপি একরামুল করিম চৌধুরী এমপি, ফেনী পৌরসভার মেয়র স্বপন মিয়াজী, দাগনভুঞা উপজেলার চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপন, নোয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন জেহান, সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব বেলায়েত হোসেন, সেতুমন্ত্রীর এপিএস মহিতুল, পিএ আবদুল মতিন ও পিআরও নাছেরকেও এ মামলায় আসামি করা হবে।
কাদের মির্জা বলেন, হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে আগামী সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় পুরো বসুরহাট পৌরসভায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
এর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পরীক্ষা থাকায় পূর্বঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শিথিল করে দুপুর ১২টা পর্যন্ত করা হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ডিউটি অফিসার এএসআই জহির বলেন, হরতালে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে কাদের মির্জার সমর্থকরা বিভিন্ন সড়কে মারমুখী ভূমিকায় অবস্থা ছিলেন। সহিংসতা ঠেকাতে পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও মোড়সমূহে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাপরাশিরহাট বাজারে কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদল অনুসারী আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদেকে কাদের মির্জা নিজের অনুসারী দাবি করেন এবং তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এদিকে সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থল থেকে আসার সময় চরকাঁকড়া টেকের বাজার নামক স্থানে বাদল গ্রুপের সদস্য হিসেবে পরিচিত ফখরুল ইসলাম সবুজের নেতৃতে রাস্তায় ব্যারিকেড দিলে আবদুল কাদের মির্জা গাড়িবহরসহ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কয়েক ঘণ্টা পর কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ, অতিরিক্ত রিজার্ভ পুলিশ ও র্যাবের কয়েকটি গাড়ি গিয়ে সড়ক অবরোধ তুলে দিয়ে মেয়র কাদের মির্জাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
এরপর তিনি বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের জানান, এমপি একরাম চৌধুরীর বাড়িতে শুক্রবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বৈঠক শেষে সন্ত্রাসীদের দুই ভাগে বিভক্ত করে আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে বাদলের নেতৃত্বে চাপাশিরহাট ও সবুজের নেতৃত্বে টেকের বাজারে হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় মিজানুর রহমান বাদল, চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, নজরুল ইসলাম শাহীন, হাসিবুস শাহীদ আলোক, ফখরুল ইসলাম সবুজ, ভাগিনা ফখরুল ইসলাম রাহাত, মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু, মাহবুবুর রহমান আরিফ গুলি ছুড়েছে।
সান নিউজ/এসএম