স্বপন দেব, মৌলভীবাজার: ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেল লাইনটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল ২০১১। প্রকল্পের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিগত আড়াই বছর আগে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। একাধিকবার প্রকল্পের সময় বৃদ্ধি করে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে কিন্তু কাজের মাত্র ৩০ ভাগ কাজ হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানা যায়, অবিভক্ত ভারতের ব্রিটিশ আমলে ৪ ডিসেম্বর ১৮৯৬ সালের চালু হয় কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথটি। এ রেলপথটি ভারতের আসাম রাজ্যের সাথে যুক্ত ছিলো। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কুলাউড়া জংশন-শাহবাজপুর পর্যন্ত লাতুর ট্রেন নামে একটি ট্রেন চলাচল করতো। তবে বাজেট স্বল্পতায় নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করায় এই রেলপথটি ট্রেন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। প্রতিনিয়ত রেল দুর্ঘটনায় চলাচল অনুপোযোগী কারণে বিএনপি সরকারের আমলে ২০০২ সালের ৭ জুলাই স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয় ১০৬ বছর চালু এ রেলপথটি।
এ রেলপথটি ২০১১ সালে পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১৫ সালে ভারতের সঙ্গে কানেকটিভিটির আওতায় কুলাউড়া-শাহবাজপুর সেকশনে পুনর্বাসন প্রকল্প সংশোধিত করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদন পায়। এরপর ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৬৭৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১২২ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট ঋণ থেকে ৫৫৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার ও ভারতের অর্থায়নের রেলপথটি প্রথমে মিটার গেজ এবং পরে ডুয়েল গেজে রূপান্তর, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ, ঋণ চুক্তি ও ঋণ ছাড়পত্রের কাজ শেষে প্রকল্পের শুরুতে অনেকটা বিলম্ব হয়। পরিত্যক্ত রেল লাইনের ওপর থেকে অবৈধ উচ্ছেদ, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজের ধীরগতি, রেললাইনের ওপর বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ না করা ও করোনার কালে কাজ প্রায় ৪ মাস বন্ধ থাকে। প্রকল্পটি আগামী ২ বছরে শেষ হবে কি না এ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এ সময়কালে প্রকল্পের কাজ হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। এখনো ৭০ শতাংশ বাকি। যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তাগিদ থাকলেও প্রকল্পে কোন গতি আসেনি। কাজের ধীরগতির কারণে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির আশংকা দেখা দিয়েছে।
২০১৮ সালের মে মাসে শুরু হওয়া রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজ চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের মে মাসে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ না হওয়ায় আরো ছয় মাস কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভারতের কালিন্দি রেল নির্মাণ কোম্পানির ব্যবস্থাপক (সিভিল) আশরাফুল ইসলাম জানান, কাজের অগ্রগতিসসহ সার্বিক বিষয় প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা ভালো বলতে পারবেন। তবে কাজ শেষ হতে আরো দু’বছর লাগতে পারে।
সান নিউজ/কেটি