নিজস্ব প্রতিনিধি, বরিশাল : দীর্ঘ প্রায় ১১ ঘণ্টা পর মহাসড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। তবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে আবার আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতার পর বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে সকাল ছয়টা থেকে সেখানে অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের তিনটি দাবি নিয়ে প্রথম দফা বৈঠক হয় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে। এ সময় উপাচার্য মো. ছাদেকুল আরেফিন তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা তাতে সায় দেননি। পরে বেলা তিনটার দিকে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে বসেন বিশ্ববিদ্যালয় তারা। যা চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় উপস্থিত ছিলেন- উপাচার্য মো. ছাদেকুল আরেফিন, সহকারী প্রক্টর সুপ্রভাত হালদার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোকতার হোসেন ও উপ-কমিশনার (ডিবি) মনজুর হোসেন প্রমুখ।
দ্বিতীয় দফা বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান বলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোকতার হোসেন বলেন, বৈঠকে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল অপরাধীদের গ্রেফতার এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা। তাদের দাবিগুলো পূরণে পুলিশ চেষ্টা করছে।
উপাচার্য মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের পথ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
উল্লেখ্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর মঙ্গলবার গভীর রাতে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ১১ শিক্ষার্থী আহত হন। এক ঘণ্টাব্যাপী নগরীর রূপাতলী হাউজিং এলাকার কয়েকটি মেসে এসব হামলা হয়। হামলার ঘটনার প্রতিবাদে সকাল ছয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের অবরোধে আটকে পড়া কুয়াকাটা এক্সপ্রেস নামক একটি বাসে আগুন বিক্ষুব্ধরা। সড়ক অবরোধের কারণে বরিশাল থেকে বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা ও কুয়াকাটার অভ্যন্তরীণ পথ এবং ঢাকাসহ অন্যান্য দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে বাস শ্রমিকেরা মারধর ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন মহাসড়ক অবরোধ করার জের ধরে পরিবহন শ্রমিকেরা এই হামলা চালান।
সান নিউজ/কেআর/কেটি