নিজস্ব প্রতিনিধি, খুলনা : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে ছেয়ে গেছে নানা বর্ণের ফুলের সমারোহে। ফুলে ফুলে উড়ে বেড়াচ্ছে মৌমাছি ও প্রজাপতি। মৌমাছিরাও ব্যস্ত মধু আহরণে। সেই সাথে ঘুরতে আসা মানুষেরাও উপভোগ করছে ফুলের সৌন্দর্য।
একদিকে বসন্তের আগমন অন্যদিকে ভালবাসা দিবস দুটিতে মিলে হয়েছে একাকার। করোনার মহামারীর কারণে এবার খুলনাতে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকলেও খুবি ক্যাম্পাস নানা বর্ণের ফুলে শোভিত হয়েছে। ফুল ফুটে পথ চেয়ে আছে। বসন্তের প্রথম দিনে রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে দর্শনার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ অনেকেই ঘুরতে আসেন এবং সেই সাথে তুলে নেন ফুলের সাথে নিজের ছবিটিও।
সবুজ ক্যাম্পাসের ইটপাথরে গড়া ভবনের সামনে দ্যুতি ছড়াচ্ছে রঙ-বেরঙের বাহারি ফুল। নজরকাড়া সব ফুলের মন মাতানো সৌরভ আর স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ দর্শনার্থীরা ব্যস্ত ছবি তোলায়। সৌন্দর্য বাড়িয়েছে প্রস্ফুটিত ফুলে। এই মনমুগ্ধকর দৃশ্য যে কাউকেই বিমোহিত করবে।
এখানে শোভা পাচ্ছে নানা প্রকারের গাঁদা, আকাশি সাদা স্নোবল, সালভিয়া, দোপাটি, ক্যালেন্ডোলা, দায়েনথাঁচ, ফ্লোগর্স, ইন্টালিয়াম, স্নাকড্রাগন, পেনজি, কারিয়াফছি, ভারবিনা, পিটুনিয়া, স্টার গোল্ড, মৌচন্ডা, পানচাটিয়া, অ্যালমন্ডা, গ্লাডিয়া, তালপাম্প, চন্দ্রমল্লিকা, ইনকা, ছোট চায়না গাঁদা, মোরগঝুঁটি, কসমস, জুঁই, চামেলি ছাড়াও আছে টগর, বেলি এবং সাইকাস, ক্রিসমাস, জবা, রঙ্গন এমনকি কয়েকটি গাছে পলাশ ফুলও। পলাশের ডাল ভরে গেছে ফুলে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে নির্মিত ম্যুরাল ‘কালজয়ী মুজিব’ এর সম্মুখে, শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের চারপাশে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল মধুসূদন দত্ত অতিথি ভবন, শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবন, অগ্রণী ব্যাংক, পোস্ট অফিস ভবন, ওয়াকওয়ে, একাডেমিক ভবন ও আবাসিক হল, উপাচার্যের বাসভবন প্রাঙ্গণে। ফুটেছে নানা প্রকারের ফুল। শোভা পাচ্ছে অসংখ্য ফুল। যেন রঙিন কার্পেট বিছানো। এসব স্থানে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ ধরণের ফুলের শোভা পাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা ফাহিম বলেন, আমার স্ত্রীকে নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছি। দেখে আমাদের খুব ভালো লাগছে। নানা জাতের ফুল দেখে আমরা বিমোহিত। ভীষণ ভালো লাগছে।
ফুল বাগানের মালি মোঃ রেজাউল করীম বলেন, প্রায় প্রতিদিনই দর্শনার্থী এখানে আসেন, ঘুরেন কিছু সময় কাটিয়ে ছবি তুলে চলে যান। তবে আজকে বিশেষ দিন তাই একটু বেশি দেখা যাচ্ছে দর্শনার্থী। এখানে প্রায় ৩০-৪০ প্রজাতির ফুল ফুটেছে বাগানে। বেশি ফুটেছে ইনকা গাদা, সালভিয়া, জাম্বু গাধা, ক্যালেন্ডোলা, পিটুনিয়া, গোলাপ। ফুলের সিজন অনুযায়ী ফুলের চারা লাগানো হয় বাগানে। এখানে ৮-১০ মালি ফুলের বাগানের পরিচর্যা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার উপ-রেজিস্ট্রার কৃষ্ণপদ দাশ জানান, গত বছরের ন্যায় এবারও ক্যাম্পাসে ফুল ফোটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এবারও লাগানো চারায় ভালো ভাবেই ফুল ফুটেছে। তবে মাঝে একদিন বৃষ্টি হওয়ায় ফুলের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও এবার ফুল আরও ১৫ দিন ভালোভাবেই থাকবে বলে আমরা আশা করছি। ক্যাম্পাসে আরও নতুন ফুলের চারা লাগানো যায়, তবে সেক্ষেত্রে জনবল ও চারা ক্রয়সহ নার্সিংয়ে আরও বাজেট বাড়ানো দরকার।
সান নিউজ/কেএ/এনকে