নিজস্ব প্রতিনিধি, রংপুর : রংপুরের বাজারে গত ১৫ দিন আগেও বাজারে কপি ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এখন সেই কপির জোড়া ৫ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তারপরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না । হঠাৎ এমন দরপতনে চরম বিপাকে পড়েছে চাষিরা। তারা ক্ষতির মুখে পড়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীরহাট, রাণীপুকুর, বৈরাগীগঞ্জ, খোড়াগাছ, সদরের পালিচড়া, জানকী ধাপেরহাট, শ্যামপুর, পীরগাছার কান্দিরহাট, পারুল দেউতি, চৌধুরানী, পাওটানাসহ জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, থরে থরে পসরা সাজিয়ে বসে আছে কপি বিক্রেতারা। কিন্তু ক্রেতা মিলছে না। অনেককে ৪-৫ টাকা জোড়া হিসেবে কপি বিক্রি করতে দেখা গেছে। যা বাজারে উঠা অন্যান্য সবজির চেয়ে দাম অনেক কম। বাজারে চাহিদার তুলনায় প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরণের শাক সবজি উঠেছে। বাজার করতে আসা ক্রেতাদের অন্যান্য শাক সবজি ক্রয় করতে দেখা গেলেও কপি ক্রয়ে আগ্রহ কম।
কান্দিরহাটের কপি নিয়ে আসা কৃষক গনেশ চন্দ্র বলেন, এ বছর ২০ শতাংশ জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেছি। প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ দামে বিক্রি করলে সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা বিক্রি হবে।
তিনি আরো বলেন, আজকে যে অবস্থা তাতে সব কপি বিক্রি হবে না। অতিরিক্ত কপি বাড়িতে নিয়ে গেলে পচে নষ্ট হয়ে যাবে। এবার কপি চাষ করে চরম বিপাকে পড়েছি। গরুও আর খেতে চাচ্ছে না। এখন জমি থেকে সব কপি তুলে গর্তে পচানো ছাড়া কোন উপায় নাই।
একই উপজেলার পাওটানাহাটে কপি বিক্রেতা নুর ইসলাম বলেন, আজকে হাটে দুইশত পিস বাঁধা ও ফুল কপি এনেছি। এখন পর্যন্ত ৬০ পিস কপি বিক্রি করেছি। বাকি কপি বিক্রি হওয়ার সম্ভবনা কম। কপি বিক্রি না হলে লসেরফু মুখ দেখতে হবে।
বাজার করতে আসা মিজানুর রহমান স্বপন জানান, বাজারে এখন প্রচুর শাক সবজি পাওয়া যাচ্ছে। দামও খুব কম। আগে নিয়মিত কপি খেলেও এখন আর খাওয়া হচ্ছে না। আগের তুলনায় এখন কপির স্বাদ নেই।
এদিকে বাজারে চাহিদা না থাকায় কপি চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়ে সর্বস্বন্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উদ্যান বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ খোন্দকার মেসবাহুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় রংপুর জেলাসহ উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক শাক-সবজি চাষাবাদ হয়েছে।
সান নিউজ/এইচএস/এনকে