মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ : জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার দরগাবাড়ির প্রাচীন বাবা আদম মসজিদটি। প্রায় ৫৩৮ বছরের পুরনো এ মসজিদের দেয়ালের অসংখ্য ইট বিনষ্ট হয়ে পাউডার হয়ে গেছে। অনেক অংশে ইট খসে গেছে। মুন্সীগঞ্জের প্রাচীন স্থাপনায় প্রথম সারিতে নাম আছে বাবা আদম শহিদ মসজিদের। এ জেলায় যারা আসেন পুরাতন স্থাপনা দেখতে তারা এখানে আসেন। মসজিদ এলাকায় বাবা আদম শহিদের মাজারও রয়েছে।
এ মসজিদটি জেলার একমাত্র সুলতানি শাসকদের স্থাপনা। সুলতান ফাতশাহের মতান্তরে সুলতান ফতেহশাহ এর শাসনামলে ৬ গম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। ১৪৭৯ থেকে ১৪৮৩ সাল। ১৪৭৯ সালে সুলতান জালাল উদ্দিন আবুজাফর শাহের শাসনামলে দরগাহবাড়িতে এ মসজিদটি নির্মাণ শুরু হয়।
বাবা আদম শহিদ মসজিদের আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৪৩ ফুট, পূর্ব-পশ্চিমে ৩৬ ফুট। দেয়াল ৬ ফুট চওড়া। ছাদে সুলতানী ডিজানে ৬টি গম্বুজ।
১৮৬৯ সালের ভূমিকম্পে ছাদের একাংশ ধসে গিয়েছিল। পরে ব্রিটিশ সরকারের ভারতীয় পত্ন বিভাগ মসজিদটির ব্যাপক সংষ্কার করে পূর্বের রূপ ফিরিয়ে আনে।
বছর খানেক যাবৎ সুলতানি আমলের এ মসজিদের ছাদে দেখা দিয়েছে ফাটল। দেয়ালের অনেক ইট গুড়োগুড়ো হয়ে গেছে। দেয়ালগুলো নোনায় ধরেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এ প্রাচীন মসজিদটির পূর্ব দেয়াল ছাড়া সকল দেয়াল নোনায় ধরেছে। পশ্চিম দেয়ালের নিম্নাংশের একাধিক স্হানে ইট খসে পড়েছে। প্রতিটি দেয়ালেই আগাছা জন্মেছে। মসজিদের টেরাকোঠার অলঙ্কার নষ্ট হয়েগেছে।
এই মসজিদের সংষ্কার বিষয়ে কথা হলো মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মিরকাদিম পৌরসভার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হোসেন রেনুর সাথে। তিনি জানান, পাঁচশত বছরের প্রাচীন এই মসজিদের সংষ্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। দেয়ালে নোনা ও ইট ডেমেজ হয়ে খসে পড়ছে৷ সুন্দর কারুকার্য অলঙ্করণগুলো বিনষ্ট হচ্ছে। ছাদে দু'টি ফাটল দেখা দিয়েছে। এই মসজিদটি জরুরি ভিত্তিতে মেরামত বা সংষ্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসক বেশ কিছু দিন আগে এ মসজিদটি দেখে গেছেন। তিনি সংষ্কারের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে বর্ষা মৌসুমের আগে সংষ্কার কাজ করলে ভালো হতো।
সংষ্কারের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে। আমি পরিদর্শন করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে জানিয়েছি মসজিদটি সংষ্কার করা হবে।
সান নিউজ/কেটি