নিজস্ব প্রতিনিধি, রাঙামাটি : রাঙামাটি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রবাসী আজিজ নামের এক ব্যক্তি পাসপোর্ট সেবা নিতে গেলে তাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাঙামাটি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক পর্যায়ে পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের যানবাহন বন্ধ করে দেয় বিক্ষুদ্ধ জনতা। পরে কোতোয়ালি থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
স্থানীয়রা বলেন, প্রবাসী আবদুল আজিজ কলেজগেট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। আজিজের সাথে পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত নাইট গার্ড মোঃ আকতার ও মোঃ দৌলতের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রবাসী আজিজ ওই কথাবার্তা ভিডিও করে এতে পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত সহকারি পরিচালক জাহিদ আলম ও তার স্টাফরা এ প্রবাসীকে মারধর করেন। বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া বাঁধে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শিমুলতলী সমাজের নেতা মিটু ও ছগির আহম্মদ বলেন, পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত দৌলত ও নাইট গার্ড আকতার সবসময় আগত পাসপোর্ট সেবা গ্রহণকারীদের টাকা ছাড়া সেবা দিচ্ছে না। প্রত্যেকটি পাসপোর্ট থেকে ২-৩ হাজার টাকা নেন এ দু’জন। প্রতিদিনই তাদের অনিয়ম দুর্নীতির খবর আমাদের কানে আসে। পাসপোর্ট করতে আসা প্রতিটি লোক হয়রানির শিকার হচ্ছে। আজকে যে ঘটনা ঘটেছে এতে প্রকৃত দোষী পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা। যেভাবে প্রবাসী আবদুল আজিজকে তারা মারধর করেছে এটার উচিৎ বিচার হওয়ার দরকার।
প্রবাসী আবদুল আজিজ বলেন, পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক, স্টাফ দৌলত ও আকতার আমাকে পাসপোর্ট করতে গেলে অনেক বার হয়রানি করে। প্রথমে আমার কাছে ৫হাজার টাকা দাবি করে। পরে ৩হাজার টাকায় মীমাংসায় আসে।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাসপোর্ট সংক্রান্ত ব্যাপারে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পাসপোর্ট অফিসার জাহিদ আলম ও তার স্টাফ আমাকে মারধর করে। তখন আমার চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে। রাঙামাটি পাসপোর্ট অফিস ঘুষের আখড়া, ঘুষ না দিলে পাসপোর্ট মিলে না। বিষয়টি জানার পরেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না এই পাসপোর্ট কর্মকর্তা।
পাসপোর্ট সহকারি পরিচালক জাহিদ আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আবদুল আজিজ কথাবার্তার এক পর্যায়ে আমাকেসহ স্টাফদের ভিডিও করে সে সময়ে আমি তার মোবাইলটি নিতে গেলে সে দৌঁড়াতে থাকে আমরাও তাকে ধরতে দৌঁড়ে যাই। এতে মারধরের মত ঘটনা ঘটে। তবে আজিজ বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে পাসপোর্ট অফিসে হামলার চেষ্টা করলে তাতে পুলিশ বাঁধা দেয়। আমার স্টাফদের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি অভিযোগ থাকলে সেটা লিখিত আকারে আমাকে জানাতে পারতো। টাকা পয়সা নেওয়ার ব্যাপারে এই পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করতে আসেনি। উপযুক্ত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) নুর ইসলাম নুরু বলেন, উভয়ের মধ্যে চরম ভুল ছিল যার কারণে এঘটনা ঘটেছে। এসময় আমার উপস্থিতিতে উভয়কে মিলমিশ করে দেওয়া হয়েছে।
সান নিউজ/কেইউ/এনকে