জামাল উদ্দিন বাবলু, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থীর প্রচারে বাধা ও নানা হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নৌকা মার্কার সমর্থকরা ধানের শীষ ও নাঙ্গল মার্কার প্রচারে কয়েক দফা বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী সাহেদ আলী পটু ও জাতীয় পার্টির আলমগীর হোসেন।
এ ব্যাপারে ধানের শীষ প্রতিকের মেয়র প্রার্থী সাহেদ আলী পটু বাদী হয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনের ও লক্ষ্মীপুর জেলা রিটার্নিং অফিসার বরাবর পৃথক দুইটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রোববার পৌর ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাকছুদকে নৌকা মার্কার সমর্থকরা হুমকি দিয়ে বলেন, ভোট কেন্দ্র না আসার জন্য। গত দুই দিন ধরে ধানের শীষের কর্মীদের নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে নৌকার সমর্থকরা। সোমবার রাতে আলেকজান্ডার বাজারে জাতীয় পার্টির আলমগীর হোসেন ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে প্রচারে নামলে নৌকার সমর্থকরা গাড়ীর তার ছিড়ে পেলেন বলেন অভিযোগ করেন মেয়র পার্থী আলমগীর হোসেন। তারা বলেন নৌকা মার্কার প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র এম মেজবাহ উদ্দীন মেজুর সমর্থকরা দুই তিন ধরে ধানের শীষ ও লাঙ্গল মার্কার প্রচার কাজে ব্যাপক বাধা দিয়ে আসছে। তারা সম্পুর্ন পাঁয়ে পড়ে ঝগড়া করার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রশাসনের কাছে এর প্রতিকার চেয়েছেন তারা। ভোট গ্রহণের আগেই এলাকা ছেড়ে না গেলে দুই প্রার্থীদের ওপর হামলার পাশাপাশি মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি-ধমকি দেওয়া সহ নির্বাচনী প্রচার কাজে ব্যাপক বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন এই দুই মেয়র প্রার্থী।
বিএনপি দলীয় প্রার্থী সাহেদ আলী পটু এবং জাতীয় পার্টির আলমগীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সরকারি দলের নেতাকর্মীদের মহড়া এবং হুমকি-ধমকির কারণে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে রামগতিতে।
বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক মেয়র সাহেদ আলী পটু বলেন, সরকারি দলের লোকজনের হুমকির কারণে আমরা ভোটারদের কাছে যেতে পারছি না। আমাদের পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যনার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। প্রচারের গাড়িতে একাধিকবার হামলা করা হয়েছে। আমিসহ আমাদের নেতাকর্মীদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ দেখছি না। এ নিয়ে ভোটারদের মাঝেও চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সুষ্ঠু, অবাধ অংশগ্রহণমূলক শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতিতে ভোটে অংশ নিয়েছি। এখন দেখছি কমিশনের পক্ষ থেকে তেমন পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে না। নির্বাচন কমশিনকে বিতর্কিত করার জন্য সরকারি দলের প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকরা এসব পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।
উল্লেখ্য, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি এ পৌরসভায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকার প্রার্থী এম মেছবাহ উদ্দীন মেজু বলেন, কোনো বিশৃঙ্খলায় বিশ্বাস করিনা আমরা। কোন অরাজকতায় বিশ্বাসী নই। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।
রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী হেকমত আলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা আমরা বাস্তবায়ন করবো।
এ ব্যাপারে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন বলেন, এই দুই মেয়র প্রার্থী মৌখিক ভাবে অভিযোগ গুলো আমাকে জানিয়েছেন। তবে লিখিতভাবে অভিযোগ পেলে প্রচার কাজে বাধা সৃষ্টি কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেইউবি/কেটি