এম.কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি : নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ৫ দিন। আসন্ন রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচনী মাঠে ব্যস্ত প্রার্থীরা। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনের শেষ সময়ে প্রচার-প্রচারণায় দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
মেয়র ও কাউন্সিলর সমর্থকদেরও চোখে ঘুম নেই। আর ভোটারা তাকিয়ে আছেন আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির দিকে। আবার অনেক ভোটার আতংক ও ভয়ে আছেন নির্বাচন নিয়ে। বেশীর ভাগ ভোটার ভোট ভাবনা নিয়ে চিন্তায় মগ্ন। যদিও নির্বাচনের ১-২ দিন আগে নির্বাচন কমিশন মগ ভোটগ্রহণ করবেন প্রতিটি কেন্দ্রে কেন্দ্রে তার পরও ইভিএম পদ্ধতি রাঙামাটিতে নতুন তাই ভোটারা এ বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে।
বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, পৌর নির্বাচনে আমরা যা দেখেছি এবং এখন থেকে যা দেখছি প্রতি পদে পদে নির্বাচন আচরণবিধি লংঘন হচ্ছে। সরকারি দল যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে যাচ্ছে তাতে মনে হয় না নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। তাই প্রশাসনের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করছি এখন থেকেই নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করুন। ৩১টি কেন্দ্রে সেনা মোতায়ন করে ম্যাজিস্ট্রেটি পাওয়ার দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।
বিএনপি এই মেয়র প্রার্থী আরো বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি আমরা চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে যা দেখেছি এমন ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সকল দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কাছে দাবি করছি গত নির্বাচনের সকল অনিয়ম পরিহার করে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করছি। প্রশাসন যদি সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করে তাহলে বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হবে।
বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী রবিউল আলম ও নুরুনবী ওনেওয়াজ বলেন, ক্ষমতাসীন দলের কাউন্সিলররা এখন থেকে আমাদের লোকজনদের হুমকি ধমকি দিচ্ছে। পোষ্টার ব্যানার লাগাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। প্রচার প্রচারণায় ও বাঁধা প্রদান করা হচ্ছে। নির্বাচনী আচারণবিধি লংঘন করছে তারা। এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচন সংশিষ্ট রিটার্নিং অফিসার সঠিক তদারকি করতে আহবান জানান তারা।
তারা অভিযোগ করে বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থীরা বার বার আমাদের পোষ্টার ছিড়ে ফেলছে। নির্বাচনী আচারণ বিধি লংঘন করে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আমরা নির্বাচন করতে পারবো না।
জেলা আওয়ামী লীগ দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সাধারণ সভায় আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী অমর কুমার দে’কে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদনের জন্য কাগজপত্রাদি প্রেরণ করা হয়েছে। কেন্দ্র থেকে তার বহিস্কারাদেশ আসলেই দল থেকে তাকে বের করে দেওয়া হবে। তবে আপাতত অমর কুমার দে’র দলীয় সকল কার্যক্রম স্থগিত রেখেছেন জেলা আওয়ামী লীগ।
নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আকবর হোসেন বলেন, আমাকে নগরবাসী আরেকবার সুযোগ করে দিলে পৌরসভার উন্নয়নে অসমাপ্ত কাজগুলো করার সুযোগ পাব। রাঙামাটি পৌরসভা সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি শহর। এখানে অনেক জাতির বসবাস। তাই আমরা সবাই মিলে মিশে সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে চেষ্টা করব। প্রিয় রাঙামাটিবাসী আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি আপনার মূল্যবান ভোট (ইভিএম পদ্ধতিতে) নৌকা মার্কায় প্রদানের জন্য ভোটারদের অনুরোধ করছি। মেয়র পদটি পুনঃবহাল রাখতে সকলে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচনে ৫ জন মেয়র প্রার্থী, ৪১ জন পুরুষ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনে ১৯ জন মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ গ্রহণ করছেন। এবারে নতুন ভোটারসহ পৌরসভায় সর্বমোট ৬৩৯১০ জন ভোটার ভোট প্রদান করার কথা রয়েছে।
সান নিউজ/কেটি