নিজস্ব প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার : শ্রীমঙ্গলে সবুজ এলাকায় মুসলিম ধর্মের অনুসারী হয়েও সনাতনী ধর্মালম্বীদের দেবোত্তর স্থান (ভৈরব থলি) রক্ষণাবেক্ষণ করে মানবতার এক চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক লন্ডন প্রবাসী আবু জালাল খান।
তিনি বিভিন্ন পূজা, বিয়ে, অসহায় দরিদ্রদের সহযোগিতাসহ তাদের সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন। দেবোত্তর স্থান ভৈরব থলিতে ভূমির মালিকানা থাকলেও শুরু থেকেই (১৯৯৩) সনাতনী ধর্মালম্বীদের সেই ভৈরব থলিতে পূজা পার্বণে ভক্তদের ফেলে দেওয়া ভোগ সামগ্রীর ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার, গাইড ওয়ালসহ ভক্তদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছেন।
সম্প্রতি এসব কাজে ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষানিত হয়ে কতিপয় কিছু লোক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় উস্কানি সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে সেই “ভৈরব থলির ৪ শত বছরের পুরনো গাছের ডাল কেটে পুরো গাছ ছাটাই করেছে জনৈক জালাল খান” বলে এসব মিথ্যা ও বানোয়াট অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে একটি স্বার্থানেষী মহল।
সনাতনী ধর্মালম্বী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা রিংকু দেবনাথ, শিবানী চক্রবর্তী, শফিক মিয়া, বাসার ম্যানেজার সাহেদুল ইসলামসহ একাধিক লোকজন জানান, প্রবাসী আবু জালাল খান একজন মানবতার ফেরিওয়ালা। হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ ভুলে সমাজসেবা মূলক কাজে সবসময় জড়িয়ে থাকেন। সেই ১৯৯৩ সাল থেকেই ভৈরব থলির রক্ষণাবেক্ষন করে আসছেন।
আমরা সেখানে নিরাপদে বসবাস করতে পারছি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও তিনি ভৈরব থলিকে ঝুকিমুক্ত রাখতে এবং সকলের মতামতের ভিত্তিতে গাছের ডাল ও পাতা ছাটাই করেছেন।
থলির পাশ ঘেঁষেই বিদ্যুৎ লাইন, ব্রডব্যান্ড লাইন, বাসাসহ লোক সমাগম রয়েছে। গাছের ডাল ছাটাই না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাছাড়া স্থানীয় ভক্তদের কথামতই ছাটাই করা হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন-এখানে ৪শত বছরের পুরনো গাছ কথাটি সঠিক নয়। ১৯৯৩ সালে প্রথমে একটি তেতুল গাছ ছিল। সেই গাছকে বেড়দিয়ে বর্তমানে একটি বটগাছের শাখা প্রশাখা গঁজিয়ে উঠেছে। আমরা স্থানীয় লোকজন এসব মিথ্যা অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এসব মিথ্যা অপপ্রচার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লন্ডন প্রবাসী আবু জালাল খান জানান- সনাতনী ধর্মালম্বীদের আমি শ্রদ্ধা করি। তাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকি। ১৯৯৩ সাল থেকেই ভৈরব থলীর রক্ষণাবেক্ষন করে আসছি। আমার নিজ মালিকানা বাসায় ৬০টি পরিবার বসবাস করে। সেখানে প্রায় ৫০টি পরিবার হিন্দু। অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন-প্রতিবছরে একবার গরু কোরবানি দেই। কিন্তু হিন্দু ভাইদের অসুবিধা হবে এমন বিবেচনায় বাসার ভেতরে গরু কোরবানি করি না। আমার গ্রামের বাড়ী রাজনগরে নিয়ে গিয়ে কোরবানি করি। সেখানে তাদের ভৈরব থলির গাছ কেটে ফেলার ঘটনা সঠিক নয়। আপনারা স্থানীয় লোকজনদের জিজ্ঞাসা করে এর সত্যতা জানতে পারেন। এসব আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার।
আমার সামাজিক সম্মান হানি করার জন্য এসব করা হয়েছে। দেশবাসী এসব অপপ্রচারে বিশ্বাস করবে না। এলাকার জনৈক চন্দন বাবু নামীয় এক ব্যক্তি আমার বাসায় শুরুতে (১৯৯৩) ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতো। সেই সময় সে ভূমির মালিক ও স্থানীয় প্রভাব বিস্তার করে টাকা দাবী করে। আমার শশুর মানসম্মানের কথা বিবেচনা করে চন্দন বাবুকে কোন মতে কিছু টাকা পয়সা দিয়ে বিদায় করেন। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে সেই ব্যক্তিসহ কিছু স্বার্থনেষী মহল এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।
সান নিউজ/এসকেডি/এনকে