এনামুল কবীর, সিলেট : সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হতাশার অবসান হতে পারে এ মাসেই। কমিটি নিয়ে অচলাবস্থা কাটতে পারে। আসতে পারে কমিটি। এমন লক্ষ্য নিয়েই এগুচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এমন আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। তার এ আশ্বাসে সাড়া পড়েছে সিলেটের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে।
সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দুটি ঐতিহ্যবাহী ইউনিট। এ দুই ইউনিটের নেতৃত্ব দিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ অন্যান্য অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনে সুনামের সাথে কাজ করছেন অনেক নেতা। তবে দীর্ঘদিন এ দুই ইউনিটের কমিটি না থাকার কারণে সেই ঐতিহ্য অনেকটাই হারাতে বসেছে। আছে আরও নানা বিতর্কিত।
জানা যায়, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। শাহরিয়ার আলম সামাদকে সভাপতি ও এম. রায়হান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে এ কমিটি গঠনের পর থেকে বিতর্ক লেগেই ছিল। এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের মার্চে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করতে বাধ্য হয় কেন্দ্র। এরপর ১ ডিসেম্বর সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলেও তেমন সুূফল মিলেনি। আর তাই ২০১৭ সালের অক্টোবরে এই কমিটিই বিলুপ্ত ঘোষণা হয়েছিল।
একই অবস্থা সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের। ২০১৫ সালের ২০ জুলাই আব্দুল বাছিত রুম্মানকে সভাপতি ও আব্দুল আলীম তুষারকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর ছাত্রলীগের ৪ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রায় সাড়ে ৩ বছরেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে না পারা এবং আরও একাধিক কারণে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর এই কমিটিও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এরপর এ দু’টি ইউনিট কমিটি গঠনের জন্য কয়েক দফা সিলেটের ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে ইচ্ছুকদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কিন্তু কমিটি আর হয়নি। এতে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্বে আসতে ইচ্ছুক নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বাড়তে থাকে। তাদের কেউ কেউ আয়-রোজগারের আশায় পাড়ি জমাচ্ছেন বিদেশে, আর কেউ কেউ ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন অন্যান্য কাজকর্ম নিয়ে।
আর সিলেট জেলা ও মহানগরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি ইউনিটে কমিটি না থাকার কারণে দলও তৃণমূল পর্যায়ে নানা ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে সচেতন নেতাকর্মীদের ধারণা।
এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানান, আমরা কাজ করছি। নেতৃত্বে আসতে ইচ্ছুকদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের কাজ প্রায় শেষের দিকে। যাচাই-বাছাইটাও শেষের দিকে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা সিলেটের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসবো। বিস্তারিত আলাপ আলোচনা হবে। এর পরপরই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কমিটি ঘোষণা করার লক্ষ্যে এগুচ্ছি আমরা। এই ফেব্রুয়ারির মধ্যেই তা হওয়ার সম্ভাবনা খুব উজ্জল।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে ইচ্ছুক এমন কয়েকজনের সাথে আলাপ হয় এ প্রতিবেদকের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, লেখক ভট্টাচার্যের এমন ঘোষণায় ঝিমিয়ে পড়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সাড়া পড়েছে। সবাই স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। তবে তাদের সবার প্রত্যাশা একটাই, নেতৃত্বে যারাই আসবেন তারা যেনো বিতর্কমুক্ত নেতৃত্বের মাধ্যমে সিলেট জেলা ও ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে মনোযোগী হন।
সান নিউজ/কেটি