নিজস্ব প্রতিনিধি, পাবনা : আরটিভিতে অনুষ্ঠিত বেঙ্গল সিমেন্ট নিবেদিত রিয়েলিটি শো ‘বাংলার গায়েন’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন পাবনার চাটমোহরের সন্তান রাসেল মৃধা। মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার ফাইনালে তিনি অন্যান্য প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে এ গৌরব অর্জন করেন। আর তাই তাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করেছে এলাকাবাসী।
ঘরের ছেলেকে বরণ করতে আয়োজন ও উচ্ছাসের কমতি ছিল না চাটমোহরবাসীর। বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার খবর জানার পর রাসেল মৃধাকে বরণ করতে প্রস্তুতি নেয় স্বজন ও এলাকাবাসী। বাদ্য-বাজনাসহ অক্ষোর প্রহর গুণতে থাকে সিরাজগঞ্জ-বনপাড়া হাইওয়ে সড়কের কাছিকাটা এলাকায়।
দুপুরের পর রাসেল মৃধাকে বহনকারী গাড়িটি কাছিকাটা মোড়ে এসে পৌঁছার পর তাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন উচ্চসিত বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষ। সেখান থেকে তাকে নিয়ে বিকেলে নিজ বাড়ি চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের দোলং গ্রামে পৌঁছায় সবাই। সেখানে অন্ধ মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাংলার গায়েন চ্যাম্পিয়ন রাসেল মৃধা। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তাকে এক নজর দেখতে রাস্তার দুই পাশে ও বাড়িতে ভিড় জমায় হাজারো মানুষ।
পরে রাসেলকে গাড়িতে করে নিয়ে বাদ্য বাজনাসহ পুরো চাটমোহর পৌর সদর প্রদক্ষিণ করে সবাই। এছাড়া নিজ গ্রাম দোলং যুব উন্নয়ন ও একতা সমিতির উদ্যোগে তাকে ফুলেল সংবর্ধনা জানায় এলাকাবাসী।
এক প্রতিক্রিয়ায় রাসেল মৃধা সাংবদিকদের জানান, আমি কল্পনাও করতে পারি নাই, মানুষের এতো ভালবাসা পাবো। আমি এলাকাবাসী ও সারাদেশের মানুষের এত ভালবাসা পেয়েছি যে অনুভূতিটা বলে বোঝাতে পারবো না। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন। আমার মায়ের দৃষ্টি যেন ফিরে পান, আবার যেন আমাকে দেখতে পান।
রাসেল মৃধার বড় ভাই মজনু মৃধা ও বোন লিলি খাতুন জানান, আমাদের ভাই আরটিভিতে বাংলার গায়েন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দেশবাসী সবার দোয়া ও ভালবাসায়। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সবার কাছে দোয়া চাই, রাসেল যেন আরো অনেকদুর যেতে পারে, সবার ভালবাসার মর্যাদা রাখতে পারে। সেইসাথে সবাই দোয়া করবেন আমাদের মা যেন তার চোখের দৃষ্টি ফিরে পেয়ে তার ছোট্ট রাসেলকে দেখতে পারে।
উল্লেখ্য, চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের দোলং গ্রামের মৃত সবুর আলী মৃধা ও মোছা. মঞ্জুায়ারা বেগমের ছেলে রাসেল মৃধা (২৮)। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট রাসেল। রাসেলের জন্মের ৬ বছর পর দৃষ্টিশক্তি হারান তার মা। বর্তমানে বয়সের ভারে কথা বলার শক্তিও হারিয়েছেন। দরিদ্র পরিবারের সন্তান রাসেল মৃধা ছোটবেলা থেকে গানটাকে ভালবেসে গেছেন।
সান নিউজ/এসআর/কেটি