নিজস্ব প্রতিনিধি, রংপুর : রংপুরের মিঠাপুকুরের প্রত্যন্ত পল্লী বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের হাছিয়া নামাপাড়া গ্রামের রাস্তা ও ব্রিজের মুখটি জন্য দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তিতে পড়েছিলেন ৬ গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষ।
একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোন সুফল পাননি তারা। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জুয়েলের অর্থায়নে রাস্তা ও ব্রিজের মুখটি বাঁধেন গ্রামবাসী।
অথচ, ২০২০-২১ অর্থ বছরের কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ওই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে, বরাদ্দের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা চেয়ারম্যান উত্তোলন করেছেন। ওই টাকাগুলো প্রায় দেড় মাস ধরে নিজের পকেটে রেখেছেন তিনি। অনুসন্ধান চালিয়ে বেড়িয়ে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের হাছিয়া নামাপাড়া গ্রামের কাঠগড়ি নদীর উপর দিয়ে রাস্তা ও ব্রিজের মুখটি সংস্কার করার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় হতে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর প্রথম কিস্তি ও চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি দ্বিতীয় কিস্তির ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা চেয়ারম্যান উত্তোলন করেছেন। কিন্তু, দীর্ঘদিনেও রাস্তাটি সংস্কার করেননি তিনি।
গ্রামবাসী দেলোয়ার হোসেন বলেন, সংস্কারের জন্য চেয়ারম্যান ময়নুল হক রাস্তার পাশে গাছগুলো কেটে নিতে বলেন। আমরা প্রায় ১ মাস আগে গাছগুলো কেটে নেই। কিন্তু, চেয়ারম্যান রাস্তা সংস্কার না করে টালবাহানা করেন।
আরেক গ্রামবাসী নজরুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান রাস্তা ও ব্রিজের মুখটি ঠিক না করায়, আমরা গ্রামবাসী মিলে কাজটি করেছি। এখন শুনছি চেয়ারম্যান ওই রাস্তাটি বাঁধার জন্য আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। কিন্তু, কোন কাজ করেননি তিনি।
স্থানীয় লাভলু মিয়া ও শফিকুল ইসলাম বলেন, যদি সরকারি বরাদ্দ হয়ে থাকে, তাহলে কাজটি করতে চেয়ারম্যান টালবাহানা করছেন কেন, বুঝতে পারছি না। মূলত, কাজটি না করে সরকারি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছেন তিনি।
বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, রাস্তা ও ব্রিজের মুখটি বাঁধতে শ্রমিক দিয়ে হবে না, ভেকু (স্কেবেটর) দ্বারা করতে হবে। ভেকু না পাওয়া যাওয়ায় কাজটি করতে দেরি হচ্ছে।
মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশফিকুর রহমান বলেন, ওই রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে, প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা চেয়ারম্যান উত্তোলন করেছেন। টাকা উত্তোলনের পরেও সংস্কার কাজটি না করার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সান নিউজ/এইচআর/কেটি