রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
সারাদেশ প্রকাশিত ৩১ জানুয়ারী ২০২১ ১৩:২৯
সর্বশেষ আপডেট ৩০ জুন ২০২১ ১৭:০৬

মৌলভীবাজারে ইটভাটায় যাচ্ছে কৃষি জমির উর্বর মাটি

স্বপন দেব, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের সাতটি উপজেলার কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে অবাধে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায়। ফসল উৎপাদনে জমির উপরের উর্বর মাটি চাষাবাদের খুবই উপকারী। হাজার হাজার হেক্টর দু’ফসলি কৃষি জমি থেকে উর্বর মাটি কেটে নেয়ায় বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাবের আশঙ্কা করছেন কৃষিবিদ ও কৃষকরা। ফলে দিনদিনই এ জেলায় ব্যাহত হচ্ছে প্রধান ফসল ধানসহ রবিশস্যের উৎপাদন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা, বরমচাল, ব্রাম্মণবাজার, কাদিপুর, কুলাউড়া সদর, রাউৎগাঁও, টিলাগাও, হাজিপুর, জয়চন্ডীসহ প্রতিটি ইউনিয়নের ফসলী জমির মাটি নামমাত্র টাকায় কিনে ইটভাটাগুলো সংগ্রহ করছে। একইভাবে কমলগঞ্জ উপজেলার কুশালপুর, আদমপুর, মাধবপুর, মুন্সীবাজার, রাজদীঘির পাড়সহ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক হারে কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে ট্রাকযোগে ইটভাটায় নেয়া হচ্ছে। কৃষিজমির মাঝখানে দেড় থেকে দুই ফুট পরিমাণ উর্বর মাটি কেটে নিচ্ছেন ইটভাটা মালিকরা।

মুন্সীবাজারের রামপুর এলাকায় রাস্তার ধারে চর্তুদিকে কৃষিজমির মাঝ থেকেই এসকেবেটর লাগিয়ে উর্বর মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। অর্থাভাবে জমির মালিকরা ইটভাটা মালিকদের কাছে জমির উর্বর মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। ভাটার মালিকরা ইট তৈরির কাজে তুলনামূলক কমদামে মাটি কিনে ভাটায় স্তুপ করে রাখছেন ইট তৈরির জন্য। ফলে আবাদি এসব জমি হারাচ্ছে উর্বরতা। এতে কৃষির উৎপাদনে দীর্ঘস্থায়ী বিরুপ প্রভাব পড়বে আর পরিবেশরও ক্ষতি বয়ে আনছে।

কৃষক জিয়াউল হক, কয়সর মিয়া, এনামুল হক বলেন, গরিব কৃষকদের বেলায় ধানের চারা রোপনের পর দোকান থেকে সার-কীটনাশক বাকিতে আনতে হয়। এরপর কৃষি শ্রমিকের খরচসহ আনুষঙ্গিক খরচ লাগে। বাধ্য হয়েই কমদামে ধান বিক্রি ছাড়া কোন উপায় থাকে না।

কৃষকরা আরও বলেন, লোকসান দিয়ে ধান বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। আবার মহাজনরা যখন ধান কিনে নেন তখন ধানের দাম বেড়ে যায়। লাভ হয় মজুতদার মহাজন ব্যবসায়িদের। তাই অনেক সময় ইচ্ছের বিরুদ্ধেও জমির উর্বর মাটি বিক্রি করতে হয়। তবে জমির উপরের উর্বর মাটি কৃষির জন্য খুবই উপকারী বলে কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন।

উপজেলার মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোপাল দেব বলেন, কৃষিজমির উর্বর মাটি খুবই জটিল বিষয়। উর্বর মাটির ছয় ইঞ্চি পরিমাণ গভীরতা চাষাবাদ উপযোগী। এই মাটি সরিয়ে ফেলা হলে পরের ৪-৫ বছর এ জমিতে ভালো ফলন হয় না। প্রচুর গোবর ও জৈবসার দিয়ে মাটিকে ফসল উৎপাদনের উপযোগী করতে কোন কোন ক্ষেত্রে ১০-১২ বছর লেগে যায়। যা শুধু কৃষকেরই ক্ষতি হচ্ছে না এতে গোটা দেশের কৃষিজ উৎপাদনে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে যা অপূরণীয়। এই জমিকে উপযোগী করতে প্রচুর পরিমাণ কৃত্রিম ও জৈবসার জমিতে দিতে হয়। পুনরায় মাটির উর্বরতা সৃষ্টি হতে কমপক্ষে দশ থেকে পনের বছর সময় লেগে যায়। এটি কৃষিজমির জন্য খুবই ক্ষতিকর।

কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন চৌধুরী বলেন, কৃষিজমির উর্বর মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। কোথাও কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সান নিউজ/এসকেডি/এনকে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

টিভিতে আজকের খেলা

প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার (১২ এপ্রিল) বেশ কিছু খেলা প্রচারিত হবে টেলিভিশনের পর...

চারুকলায় আগুনে পুড়ল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’

নববর্ষ শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে বানানো দু...

গাইবান্ধার ধর্ষণ মামলার আসামি বগুড়ায় গ্রেপ্তার

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় গৃহবধু ধর্ষণ মামলার...

হিমাগারে বিএডিসির আলুবীজের জায়গা মিলে নাই; বিপাকে কৃষক

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বিএডিসির আলুবীজ হিমাগারে জায়...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা