ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে রোববার আসছে করোনার ৫ লাখ ৪ হাজার ডোজ টিকা। কিন্তু টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে না সহসা। কারণ টিকাদান কার্যক্রমের প্রশিক্ষণই শেষ হয়নি এখনো। সে কারণে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকেও মেলেনি চট্টগ্রামে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর অনুমতি।
এমন তথ্য জানিয়েছেন চসিকের করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সংশ্লিষ্টরা। তবে কমিটির সদস্য সচিব ও চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় টিকাদান কার্যক্রম শুরুর প্রশিক্ষণ ও সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।
তিনি বলেন, চসিক এলাকায় প্রাথমিকভাবে ১৫টি কেন্দ্রে করোনার টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আর এসব কেন্দ্রে টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে ৪২টি টিম। টিকাদানকারী হিসেবে ২ জন মিড ওয়াইফ, স্টাফ নার্স বা সিনিয়র স্টাফ নার্স এবং ৪ জন স্বেচ্ছা সেবকের সমন্বয়ে প্রতিটি টিমে মোট ৬ জন সদস্য থাকবেন। এরইমধ্যে কেন্দ্র ভিত্তিক টিম প্রস্তুত ও তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রস্তুতিও শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি।
কেন্দ্রগুলো হলো- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম সেনানিবাস হাসপাতাল, চট্টগ্রাম পুলিশ হাসপাতাল, সিটি কর্পোরেশন জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম নৌ-বাহিনী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বিমান বাহিনী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতাল, চসিক বন্দরটিলা হাসপাতাল, চসিক মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল, চসিক ছাপা মোতালেব মাতৃসদন হাসপাতাল, ইউএসটিসি হাসপাতাল, সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মা ও শিশু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তবে কেন্দ্র তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে জানান ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী-চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম সেনানিবাস হাসপাতালে ৪টি করে টিম নিয়োজিত থাকবে। আর ৮টি টিম নিয়োজিত থাকবে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। চট্টগ্রাম পুলিশ হাসপাতালে টিম কাজ করবে ১টি। এর বাইরে নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সিটি কর্পোরেশন জেনারেল হাসপাতালে ৪টি এবং মা ও শিশু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩টি টিম কাজ করবে। আর বাকি ৯টি কেন্দ্রে ২টি করে টিম টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে। টিমগুলোকে টিকাদানের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রস্তুতি চলছে।
সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, টিম গঠন করে তালিকা পাঠাতে আমরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি পাঠিয়েছি। তালিকা পাওয়ার পর এসব টিমের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু এবং আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে।
উপজেলা পর্যায়ে টিকাদান :
এদিকে চট্টগ্রাম জেলার উপজেলা পর্যায়ে প্রাথমিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে করোনার টিকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মেক ফজলে রাব্বি। তিনি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ২টি করে টিম টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে। টিকাদানে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে শনিবার থেকে জেলা পর্যায়ের এবং ১ ফেব্রুয়ারি থেকে উপজেলা পর্যায়ের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে।
রোববারের মধ্যে টিকা আসলেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের লিখিত কোনো নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত স্থানীয় পর্যায়ে এই টিকাদান কর্মসূচি শুরুর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা পেলে তবেই এ টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হবে।
করতে হবে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন :
টিকা পেতে অগ্রাধিকার তালিকাভুক্তদের অনলাইনে বাধ্যতামূলক ভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এজন্য সুরক্ষা অ্যাপ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। ভ্যাকসিন পেতে সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে (www.wsurokkha.gov.bd) গিয়ে অথবা মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে পারবেন। অ্যাপটি ফ্রি ডাউনলোড করা যাবে। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও মোবাইল নম্বর দিয়ে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় কেন্দ্র পছন্দের সুযোগ থাকবে। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভ্যাকসিন গ্রহণের তারিখ ও কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। নির্দিষ্ট তারিখে নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশনকারী ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিতে পারবেন।
সান নিউজ/কেটি