হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর : রংপুরের মিঠাপুকুরে গভীর নলকূপের লাইসেন্স নবায়ন না হওয়ায় দুই শতাধিক একর জমিতে এবার বোরো চাষ করতে পারছেন না কৃষকরা। এর ফলে ৪ শতাধিক কৃষক আর্থিক ক্ষতি সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক ও গভীর নলকূপ সমিতি’র সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন কিন্তু দীর্ঘদিনেও কোন প্রতীকার পাননি তারা।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিঠাপুকুর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর সোনারপাড়া গ্রামে ১৯৮৬ সালে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। দুই শতাধিক একর জমিতে বোরোসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে কৃষকরা। স্থানীয় কৃষক সমবায় সমিতির ৮৬ জন সদস্য উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ড থেকে ঋণ হিসেবে গভীর নলকূপটি গ্রহণ করে জমিতে চাষাবাদ করে আসছেন। ২০০৮ সালে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের সুদমুক্ত এক লাখ ৬৪ হাজার টাকা পরিশোধ করেন কৃষকরা। পল্লী উন্নয়ন বোর্ড ওই সমিতির নামে গভীর নলকূপটির মালিকানা হস্তান্তর করে। এরপর লাইসেন্স নবায়ন করে কৃষকরা জমিতে পানি সেচ দিয়ে আসছেন। কিন্তু ২০১৯ সালের বোরো মৌসুমে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। এ ঘটনায় গভীর নলকূপের স্কিম ম্যানেজার মোস্তাফিজার রহমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেচ পরিচালনা কমিটির সভাপতি বরাবর এবার কৃষক সমিতির নামে গভীর নলকূপের মালিকানা হস্তান্তর এবং লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও গভীর নলকূপের দায়িত্ব সমিতির নিকট হস্তান্তরের সুপারিশ করেন।
কিন্তু উপজেলা বিএডিসি সেচ এর সহকারী প্রকৌশলী রহস্যজনক কারণে মালিকানা হস্তান্তর করছেন না। এমনকি ওই সমিতির নামে গভীর নলকূপটির লাইসেন্সও নবায়ন করে দেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে, বোরো মৌসুমে চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষক।
গভীর নলকূপের স্কিম ম্যানেজার মোস্তাফিজার রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিএডিসি অফিসারের কার্যালয়ে ধর্ণা দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না।
কয়েকজন কৃষক বলেন, জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় আমরা জমিতে বোরো ধানের চারা লাগাতে পারছি না। এতে, আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, স্থানীয় দু’পক্ষের গ্রুপিংয়ের কারণে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। একারণে, গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেচ পাম্পটি চালানোর কিন্তু, চেয়ারম্যান আর্থিক বিষয়ে নানা অনিয়ম করেছিলেন। একারণে, চলতি মৌসুমে আরও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) মিঠাপুকুর উপজেলা ইউনিটের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে তৃতীয় পক্ষ সেখানে গভীর নলকূপটি চালু করতে চাচ্ছে। এখানে আমার কোন হাত নেই। আমি লাইসেন্স নবায়ন করার কেউ না। যা করার ইউএনও স্যার করবেন।’
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মামুন ভুঁইয়া বলেন, বিষয়টি নিয়ে সেচ কমিটির সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সান নিউজ/কেটি