এম.কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি : পাহাড়ের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা পাবে জনগণ। এধরনের মহতি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ সরকার। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগণের দোঁড় গোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছিয়ে দিতে ইতোমধ্যে রাঙামাটি জেলার ১০ উপজেলাতে ১০৮টি ক্লিনিক চালু করেছেন সরকার। আরও ১৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। জনবল নিয়োগ হলেই এই ১৯টি হেলথ কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হবে।এসব ক্লিনিকে বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ ঔষধ বিতরণ করা হয়। পাহাড়ে স্বাস্থ্য খাতে আমুল পরিবর্তন এসেছে এ সরকারের আমলে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের টার্গেট এ জেলাতে প্রায় আরও ২শ’কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে। জেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ১টি করে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বাস্থ্য বিভাগের উন্নয়ন খাত থেকে এসব ক্লিনিকের হেলথ ক্লিনিক প্রোভাইডারদের বেতন ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আর তাদের দেখাশুনা ও উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছেন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।
স্থানীয়দের মতামত, প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকায় যে সকল কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে তাদের মাধ্যমে আমরা অসহায় হতদরিদ্র লোকজন প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা পাচ্ছি। মোটামোটি ক্লিনিকের দায়িত্ব প্রাপ্তরা ভালভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এসব ক্লিনিক প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নির্মাণ করা হলে জনগণ আরও বেশী বেশী স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। অপর দিকে এসব ক্লিনিকে যন্ত্রপাতিসহ চিকিৎসা সেবার মান আরও বাড়ানো হলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।
মোনালিসা তুলাবান কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ ক্লিনিক প্রোভাইডার রিংকি চাকমা ও পাতাছড়ি নানিয়ারচর কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ ক্লিনিক প্রোভাইডার বলেন, অনেক আন্দোলন সংগ্রামের পর সরকার আমাদের মূল্যায়ন করেছেন। সেজন্য সরকার বাহাদুরকে অশেষ ধন্যবাদ। এখন আমরা নিয়মিত বেতন ভাতা পাচ্ছি। করোনাকালিন সময়েও আমরা প্রথমসারির যোদ্ধা হিসেবে জনগণের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসাসেবা দিয়েছি। প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকায় আমরা জনগণের পাশে থেকে সেবা প্রদান করে আসছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন্যস্ত কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ ক্লিনিক প্রোভাইডাররা ও করোনা প্রণোদনা পাওয়ার কথা। জানি না কপালে করোনা প্রণোদনা আছে কি না।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা স্যানেটারী পরিদর্শক মোঃ শওকত আলী বলেন, প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আমি স্বাস্থ্য খাতে পরিদর্শন করে থাকি। এ সুবাদে প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পরিদর্শন করে থাকি। এসব কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো জনস্বার্থে ভাল কাজ করছে। এযাবৎ অনেক গুলো ক্লিনিক আমি পরিদর্শন করেছি, তাতে দেখলাম তাদের চিকিৎসা সেবার মান অত্যন্ত ভাল। কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিক প্রোভাইডার যারা কর্মরত আছেন তারা আন্তরিকতার সহিত রোগীদের সেবা প্রদান করছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি তারা সেবা পেয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপাশ খীসা বলেন, সারা দেশের ন্যায় রাঙামাটিতেও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে। এগুলো স্বাস্থ্য বিভাগের অধীন্যস্ত তাই দেখভালের দায়িত্ব আমাদেরও রয়েছে। তবে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হবে। মূলতঃ এই উদ্যোগ জনগণের দোঁড়গড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছিয়ে দেওয়া। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক এসব ক্লিনিকগুলোর হেলথ প্রোভাইডারদের সকল ধরনের সহযোগিতা দিয়ে থাকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
সান নিউজ/কেইউ/এনকে