রেজাউল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : তিস্তা চরের উৎপাদিত বেগুন এখন বিক্রি করা হচ্ছে জেলার বাহিরে। স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পর যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এতে অধিক মুনাফা অর্জন করছেন চাষিরা।
তিস্তার চরাঞ্চল এখন রবি ফসল চাষাবাদের জন্য সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠেছে। বালু চরে চলতি মৌসুমে বেগুনের ভাল ফলন দেখা দিয়েছে। বেগুনসহ নানাবিধ ফসলে ভরে উঠেছে তিস্তার চরাঞ্চল। জমি জিরাত খুঁয়ে যাওয়া পরিবারগুলো পুনরায় চরে ফিরে এসে চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছে। দীর্ঘদিন পর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া জমির ফসল ঘরে তুলতে পেরে খুশি কৃষকরা।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত রাক্ষুসি তিস্তা নদী এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। চরাঞ্চলের হাজারও একর জমিতে এখন চাষাবাদ করা হচ্ছে নানাবিধ প্রজাতির ফসল। বিশেষ করে গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন, মরিচ, পিঁয়াজ, রসুন, টমেটো, বাদাম, সরিষা, তিল, তিশি, তামাক, কুমড়াসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষাবাদ করা হচ্ছে।
কথা হয় হরিপুর ইউনিয়নের মাদারীপাড়া গ্রামের ফুল মিয়ার সঙ্গে। তিনি নিজে ২ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছে। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ১০০ মণ বেগুন পাওয়া যায়। দীর্ঘ ৬ মাস ধরে বেগুন তোলা হয়। স্বল্প খরচে অধিক লাভের আশায় চরের কৃষকরা এখন বেগুনসহ নানাবিধ তরিতরকারি চাষে ঝুঁকে পড়েছে।
তিনি বলেন, বেগুনের দামও এখন ভাল। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ২৫ হতে ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে প্রতি মণ বেগুনের দাম হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা।
সুন্দরগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় বেগুনের চাহিদা অনেক বেশি। তাছাড়া স্থানীয়ভাবে বেগুন কিনে বিক্রি করলে লাভ বেশি হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১৬৫ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন জানান, চরাঞ্চলের জমিতে তরিতরকারির আবাদ এখন ভাল হয়। সে কারণে চরের মানুষ এখন অনেক খুশি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান, পলি জমে থাকার কারণে চরের জমি অনেক উর্বর। যার কারণে যে কোন প্রকার ফসলের ফলন ভাল হয়। তিনি বলেন, চরের কৃষকরা নিজে পরিজন নিয়ে জমিতে কাজ করে। সেই কারণে তারা অনেক লাভবান হয়। বিশেষ করে তরিতরকারি চাষাবাদে চরের জমি এখন উপযোগী হয়ে উঠেছে।
সান নিউজ/কেটি