নিজস্ব প্রতিনিধি, সিলেট : তাদের ঘর থাকবে কি, কোন জমিই ছিল না। নানা দুঃখ কষ্ট আর বঞ্চনায় কাটছিল জীবনের প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহুর্ত। চরম দরিদ্র এই মানুষগুলোর একটা বড় কষ্টের স্থায়ী সমাধান করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেটের প্রায় দেড় হাজার পরিবারে এখন রীতিমতো আনন্দের বন্যা বইছে। ঘর পেয়েছেন তারা।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে সিলেটসহ দেশের অন্যান্য জেলাগুলোর 'স্বপ্ননীড়' আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে তৃণমূলের গৃহহীন মানুষদের জন্য তার এই বিশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়ন একধাপ এগিয়ে গেলো।
অবশ্য এ প্রকল্পের আওতায় সিলেটে প্রায় ৪ হাজার একশ' ৭৮ জনের ঘর তৈরির কাজ চলছে। শেষ হয়েছে এক হাজার চারশ' ছয়টির। সেগুলো সুবিধাভোগীদের ইতিপূর্বেই দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে এগিয়ে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা। এ উপজেলার শতভাগ ঘরই ইতিমধ্যে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় কানাইঘাট উপজেলার মোট ১৯৩ জন ভূমি ও গৃহহীনকে এ সুবিধা দেয়ার জন্য নির্বাচন করা হয়েছিল।
এ কারণে কানাইঘাটে রীতিমতো উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি জানান, অসহায় গৃহহীনরা ঘর পেয়ে উচ্ছসিত। দুঃখী এই মানুষগুলোর মুখে প্রশান্তির হাসি ফুটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ উপজেলারই গৃহহীন সামসুল ইসলাম (২২) মোবাইলে এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানান, বস্তি কলোনি বা কারও ঘরে আশ্রয় নিয়ে জীবনের অনেকটা দিন কাটিয়েছেন তার বাবা। শেষ জীবনে এসে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেয়ে আমরা খুব খুশি।
এমন খুশি বিরাজ করছে সিলেটের প্রায় প্রতিটি উপজেলার ঘর পাওয়া মানুষের মধ্যে।
এ পর্যন্ত সিলেট জেলার স্বপ্ননীড় পাওয়া ১ হাজার ৪শ ৬টির মধ্যে উপজেলা অনুযায়ী হিসাবটা এরকম, সিলেট সদর উপজেলায় মোট ১৪৪ জনের মধ্যে ১৭, দক্ষিণ সুরমার ১২০ জনের মধ্যে ১৫, বিশ্বনাথের ৬৬৯ জনের মধ্যে ১২০, ওসমানীনগরের ৫৩৩ জনের মধ্যে ১৪০, বালাগঞ্জের ৮৭৫ জনের মধ্যে ১৪০, বিয়ানীবাজারের ১০৪ জনের মধ্যে ৩০, গোলাপগঞ্জের ২০০ জনের মধ্যে ৭৭, ফেঞ্চুগঞ্জের ১৩০ জনের মধ্যে ৭২, গোয়াইনঘাটের ৫০০ জনের মধ্যে ২৭০, জৈন্তাপুরের ৩৩০ জনের মধ্যে ১২৪, কোম্পানিগঞ্জের ২৫০ জনের মধ্যে ১৫৭, জকিগঞ্জের ১৩০ জনের মধ্যে ৫৫ জন জন গৃহহীন দুই কক্ষ, একটি রান্নাঘর ও ১টি বাথরুম বিশিষ্ট ঘরের মালিক এখন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রতিটি ঘর নির্মাণে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
প্রকল্পের আওতায় নির্মানাধীন অন্য ঘরগুলোর কাজও যত দ্রুত সম্ভব সমাপ্তের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সান নিউজ/এক