এএসএম আলমগীর, দিনাজপুর : লাল ইটের তৈরি ৪১৫টি বাড়ি, তার উপর লাল চকচকে টিনের ছাউনি। পাখির চোখে তাকালে মনে হবে যেন একেকটি লাল সূর্য উঁকি দিচ্ছে দিনাজপুরের বিরামপুরের বুকে।
মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার বিশেষ উপহার হিসেবে দিনাজপুরের বিরামপুরে সেই সব পাকা বাড়িঘর পাচ্ছেন ৪১৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার।
প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন উপহার পেয়ে আবেগে আপ্লুত ও উচ্ছ্বসিত হয়েছেন এসব পরিবারের মানুষেরা। শনিবার (২২ জানুয়ারি) সারাদেশে একযোগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব বাড়ি হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিরামপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার খাঁনপুর ইউনিয়নে ৩১১টি, দিওড় ইউনিয়নে ২৮টি, বিনাইল ইউনিয়নে ৫৯টি এবং কাটলা ইউনিয়নে ১৭টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছ।
বিরামপুরের গৃহহীন মাহালী অলফন হাসদা বলেন, আমার বাপ-দাদা অন্যের জমিতে খুপরি ঘরোত থাকে জীবনটা গেল। না জমি কিনবা পাননা বাড়িও করবা পাননা। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা হাসিনার কাছ থেকে জমিসহ পাকা বাড়ি পামো স্বপ্নেও বিশ্বাস করবা পারোনি।
আরেক মাহালি দিপালী বেওয়া বলেন, হারা সারা দিন বাঁশের কাজ করে যা পায় তা দিয়ে তো পেটে চলে না। কোনদিন ভুল করেও ঘর করার স্বপ্ন দেখিনি। শেখ হাসিনা হামাক জমি দেছে শুনে বিশ্বাসী করবা পারেনি। পরে ইউএনও স্যার যখন উপজেলার নিয়ে যায় দলিল করে দিয়ে ঘর দেখালো তখন ইটের বাড়ি দেখে খুশিতে কান্দে ফালাইসি।
বিরামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাওসার আলী বলেন, প্রতিটি ঘর তৈরিতে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এই টাকা ব্যয়ে দুটি করে বেডরুম, ১টি করে টয়লেট, ১টি করে স্টোররুম কাম রান্নাঘর সম্বলিত একটি বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে।
বিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু জানান এখানে ঘর তৈরিতে সব এক নম্বর ইটসহ প্রতিটি উন্নত মানের উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। সেজন্য আমাদের যে উপকারভোগী আছে তারা যেখানেই থাকেন তাদেরকে বলে দেওয়া আছে ও ক্ষমতা দেওয়া আছে এখানে যদি কোনোরকম খারাপ কিছু পায় সেগুলো দিয়ে যেন কাজ করতে দেওয়া না হয়।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার জানান, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন মুজিববর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা কিন্তু প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের হাকিমপুর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অধীনে ৪১৫ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী সেই ঘর নির্মাণের কার্যক্রম নিয়মিত তদারকি করে একটি মানসম্পন্ন ঘর যেন গৃহহীনরা পায় সে লক্ষ্যে প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করেছে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম বলেন, মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরূপ এসব ঘর দেওয়া হচ্ছে। এই উপহার পেয়ে তারা খুব খুশি ও তারা প্রাণভরে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করছে। তাদের কামনা প্রধানমন্ত্রী যেন দীর্ঘজীবী হয় ও মানুষের জন্য আরও বেশি কাজ করতে পারে। আমি ঘর পাওয়া পরিবারগুলোর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি তারা যেন তাদের সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলে তাদের লেখাপড়ার দায়িত্ব অবশ্যই সরকার নেবে।
সান নিউজ/এম