নিজস্ব প্রতিনিধি, গাজীপুর : বিনা অপরাধে ৫ বছর কারাভোগের পর হাইকোর্টের নির্দেশে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) মুক্তি পেয়েছেন রাজধানীর পল্লবী এলাকার বেনারসী কারিগর মো. আরমান (৪৬)। তিনি ঢাকার পল্লবীর ১০ নম্বর সেকশনের ব্লক-এর ১৩ হাটস’র মৃত ইয়াসিনের ছেলে।
জানা গেছে, ২০০৫ সালে ককটেল ও দেশীয় অস্ত্রসহ ৭ জনকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকা হতে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। আটককৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করতে পল্লবীর বিহারী ক্যাম্পের এক বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানকালে ওই বাসা থেকে ৪০ বোতল ফেনসিডিলসহ শাহাবুদ্দিন বিহারী ও তার দুই সহযোগীকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় পল্লবী থানায় মাদক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শাহাবুদ্দিন বিহারীসহ গ্রেফতারকৃত তিনজনের বিরুদ্ধে অফিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ২০০৭ সালের ৫ মার্চ জামিনে মুক্তি পান শাহাবুদ্দিন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১৭ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেন শাহাবুদ্দিন। আদালত থেকে জামিন পেয়ে ফেরার হন তিনি। তার অপর দুই সহযোগীর জামিনের আবেদন আদালত নাকচ করে দেন।
২০১২ সালের ১ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফারুক আহমেদ। রায়ে শাহাবুদ্দিন ও তার দুই সহযোগীর প্রত্যেককে ১০ বজল করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়। আদালত পলাতক শাহাবুদ্দিন বিহারীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ ঘটনার পর ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আরমানের বাসায় যায় পুলিশ। এসময় শাহাবুদ্দিনের বাবার সঙ্গে আরমানের বাবার নামের মিল থাকায় বাসার পাশের পাশের একটি চায়ের দোকান থেকে আরমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার আবু সায়েম জানান, গ্রেফতারকৃত শাহাবুদ্দিন বিহারী ওরফে আরমানকে ২০১৬ সালের ২৪ জুন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার, পার্ট-২ এ স্থানান্তর করা হয়। তার বাবার নাম ইয়াসিন থাকলেও কাগজে বাবার নাম ইয়াসিন ওরফে মহি উদ্দিন লিখা রয়েছে বলে আরমান জানিয়েছে। এ ব্যাপারে আদালতে রিট করা হয়। এরপ্রেক্ষিতে গত ৩১ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ মুক্তি দেয়াসহ ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে পুলিশ মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশ দেন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আদালতের আদেশ কারাগারে এসে পৌঁছে। পরে যাচাই বাছাই শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আরমানকে বিনা অপরাধে প্রায় ৫ বছর কারাভোগের পর কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এসময় কারা ফটকে আরমানের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সান নিউজ/টিআইএস/কেটি