নিজস্ব প্রতিনিধি, মেহেরপুর : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের ষাটোর্ধ জিন্নাত আলী। পেশায় ছিলেন একজন কাঠুরিয়া। সংসারে রয়েছে স্ত্রী ও দু’মেয়ে। বছর পনের আগে হঠাৎ পঙ্গু হয়ে পড়েন তিনি। আয় রোজগারের পথটি বন্ধ হয়ে যায় তার। সেই সাথে বন্ধ হয়ে যায় দু বেলা দু’মুঠো ভাতের নিশ্চয়তা। শেষ পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ করে কোন মতে সংসারের চাকা সচল রাখেন জিন্নাত আলীর স্ত্রী পারুলা খাতুন। এ অবস্থায় একটি ঝুপড়ি ঘরে প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রাম করে গোটা পরিবারটি বেঁচে আছেন। অবশেষে মুজিব শতবর্ষে জিন্নাত আলীকে একটি ঘর উপহার দিচ্ছেন সরকার।
এদিকে রামনগর গ্রামের আব্দুর রশীদের স্ত্রী তহমিনা খাতুনও পাচ্ছেন একটি দুর্যোগ সহনীয় ঘর। বছর পাঁচেক আগে আব্দুর রশীদ পঙ্গুত্ব বরণ করেন। নিজের কোন জমি নেই। অন্যের জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘরে তার বসবাস। শুধু জিন্নাত আলী কিংবা তহমিনা নয়, তার মতো জেলার ৬৩ টি অসহায় ও ভূমিহীন পরিবার পাচ্ছেন দুর্যোগ সহনীয় ঘর।
জেলা প্রশাসন অফিস সুত্রে জানা গেছে, জেলার তিনটি উপজেলায় ভূমিহীন ও অসহায় পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রথম ধাপে ২৯ টি দ্বিতীয় ধাপে ২৪ টি এবং ১০টি বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি ঘরের ব্যায় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা।
ইতোমধ্যে নির্মাণ কাজ সিংহভাগ সমাপ্ত হয়েছে। চলতি মাসে সকলেই নতুন ঘরে উঠবেন। ঘরে দুটি শয়ণ কক্ষ, একটি রান্না ঘর ও একটি বাথরুম রয়েছে।
জিন্নাত আলীর স্ত্রী পারুলা খাতুন জানান, স্বামী পঙ্গু হবার পর চোখে মুখে হতাশার ছায়া দেখতে পান তিনি। পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ আর মেয়ের তৈরী বাজারের ব্যাগ তৈরী করে কোনমতে সংসার চলে। নিজের জমি নেই তাই টেকসই ঘর নির্মাণ তার দুঃস্বপ্ন। হঠাৎ জানতে পারেন সরকার তাদেরকে ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন। নতুন পাঁকা বাড়িতে উঠবেন। এর চেয়ে আর আনন্দের কিছু নেই বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক ড. মনসুর আলম খান জানান, মুজিব শতবর্ষে সরকারের অঙ্গীকার ছিল কোন লোক গৃহহীন থাকবে না। সেমতে ভুমিহীন অসহায় পরিবারকে ঘর দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি ঘরই বেশ টেকসই। আগামী জমি আছে ঘর নাই তাদেরকেও ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে।
সান নিউজ/এজে/এনকে