কর্ণ বাবু দাস, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে ঘরবাড়ি হারিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে দোয়ারাবাজার উপজেলার মাছিমপুর গ্রামের ১৬ পরিবার। পরিবার পরিজন নিয়ে চরম কষ্টে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে তারা। গত ৮ জানুয়ারি থেকে নদীগর্ভে তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে যায়। ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে স্কুলে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
এখন পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের পক্ষ থেকে এসব পরিবারের সামান্য খোঁজ খবরটুকু পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। তারা পায়নি কোনো ধরনের ত্রাণ বা মানবিক সহায়তা।
বিদ্যালয়ের ৩টি পুরাতন ক্লাসরুমে রুমপ্রতি ৩-৪টি পরিবারের সদস্যদের গাদাগাদি করে বসবাস করতে দেখা গেছে। পর্যাপ্ত চুলা না থাকায় রান্নার কাজে চুলার সামনে লাইন ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে এসব পরিবারের মহিলাদের। ক্লাসরুমে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় গৃহস্থালির দৈনন্দিন কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। অনেকেই শীতে কষ্ট ভোগ করছেন। হঠাৎ বাস্তুচ্যুত হওয়ায় অনেক পরিবার আর্থিক টানাপোড়নে পড়েছেন। সবার মুখে হতাশার ছাপ। ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের।
আশ্রয় নেওয়া বাবুল দাশ জানান, কিছুদিন আগে সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আমাদের এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। নদী ভাঙনে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তারা আমাদেরকে ঘর অন্যত্র সরানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাদের পরামর্শ মতো আমরা ১৬টি পরিবার হাইস্কুলে আশ্রয় নিয়েছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ঘর নদীতে বিলীন হয়েগেছে। বাকিগুলোও ঝুঁকির মুখে রয়েছে। যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে। আপাতত আমাদের থাকার জন্য বিদ্যালয়ের আরো কয়েকটা রুম বরাদ্দ দেওয়া হোক। এখানে এক রুমে অধিক মানুষ গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। রান্নাবান্না করতে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের কোথাও যাওয়ার মতো জায়গা নাই। সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই আমাদেরকে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা জানান, ঘর হারিয়ে কয়েকটি পরিবার হাইস্কুলে আশ্রয় নিয়েছে খবর পেয়েছি। তাদেরকে দেখে আসব। তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টি নিয়ে আলাপ করবো।
সান নিউজ/কেটি