নিজস্ব প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সরকারি খালের ওপর বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস করছে তিনটি পরিবার। এতে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় এলাকাবাসী দুর্ভোগে রয়েছে। বর্ষা ছাড়াও অন্য মৌসুমে বৃষ্টি এলেই সেখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। অল্প বৃষ্টিতেই প্লাবিত হয় পুরো এলাকা। রামগতি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সবুজগ্রামের শতাধিক পরিবার প্রায় ১০ বছর ধরে দখল নৈরাজ্যে দুর্ভোগের শিকার।
অভিযুক্ত পরিবারগুলোর কর্তারা হলেন- আবদুর রব, আলাউদ্দিন ও মফিজুল ইসলাম। সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বাণী সিনেমা হলের পশ্চিম পাশে লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়ক থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেন্ট্রাল খালের কোন চিহ্ন দেখা যায়নি। স্থানীয়দের দখলে প্রায় ১৪ শতাংশ জমি সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এতে তিনটি বসতঘর, দোকান ও বাগান রয়েছে। দোকান ও বসতঘরের পরেই খাল দেখা যায়। তবে খনন না করা আর দখলের কারণে খালটি মৃতে রূপ নিচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মেঘনা নদী সংযোগ রামগতি পৌরসভার সবুজগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেন্ট্রাল খালের প্রায় ১০০ শতাংশ (দাগ নং-২৮৫৬) এলাকা স্থানীয় বাসিন্দাদের দখলে রয়েছে। ১০ বছর আগে পৌর শহরের বাণী সিনেমা হল এলাকায় তিনটি পরিবার ১৪ শতাংশ খালের ওপর বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে। এতে খাল দখল হয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে বর্ষাসহ অন্যান্য মৌসুমে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদ করলেই আবদুর রব, আলাউদ্দিন ও মফিজুল ইসলামরা এলাকাবাসীকে মামলা-হামলার ভয় দেখায়। তবে এ খাল দখল নিয়ে সরকারের সঙ্গে ওই তিন পরিবারসহ কয়েকজনের মামলা বিচারাধীন।
ভুক্তভোগী আবদুল হক বলেন, খাল ভরাট করে তিন পরিবার বসতঘর নির্মাণ করেছে। পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে খালে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি এলেই পুরো এলাকা প্লাবিত হয়।
৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ শামছুদ্দিন বলেন, ১২ বছর আগেও খালে পানি প্রবাহ ছিল। জোরপূর্বক খাল দখলের কারণে পুরো এলাকার মানুষ ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বৃষ্টি হলে ময়লা পানিতে এলাকা প্লাবিত হয়। এ কারণে আমাদের চলাচলসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
অভিযুক্ত আলাউদ্দিনের ছেলে জাবেদ হোসেন ও আবদুর রব জানায়, তাদের ঘরের কিছু জমি সরকারি খালের ওপর রয়েছে, তবে পুরোটা নয়। খালের দুপাশের মানুষের ব্যবহারের কারণেই খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে ভরাট হয়ে যায়। তারা একা খাল ভরাট করেনি। সরকার খাল খননের উদ্যোগ নিলেই তারা জমি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
রামগতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, খাল দখল নিয়ে মামলা চলছে। এর দলিলাদি পর্যালোচনা করা হবে। এ ছাড়া পাশেই সরকারি ১০ শতাংশ জমিতে অনুপ্রবেশ নিষেধ করে নির্দেশনা ঝুলানো রয়েছে।
সান নিউজ/জেইউবি/কেটি