সারাদেশ

আদিবাসী নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

নিজস্ব প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায় চোর সন্দেহে বর্মন সম্প্রদায়ের এক আদিবাসী নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার (১১ জানুয়ারি ) রাতে সন্ধ্যা রানী (৩৫) নামে ভুক্তভোগী আদিবাসী এই নারী ৫ জনকে আসামি করে ঘাটাইল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার অভিযুক্তরা হলেন- মনিরুল ইসলাম ভূইয়া (৮০), তার ২ ছেলে মোস্তফা ভূইয়া (৪৫) ও সজিব ভূইয়া (৪০), মনিরুলের ২ মেয়ে মোছা. খুকি (৩৭), সুমি আক্তার (৩২)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, সন্ধ্যা রানী উপজেলার সাগরদিঘি ইউনিয়নের মালিরচালা গ্রামের নারায়ণ বর্মনের স্ত্রী। তিনি ২ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানের জননী। আসামিদের সন্তানদের সঙ্গে তার ছোট ছেলে পলাশ (৮) খেলা করত এবং ঘুড়ি ওড়াত। ঘটনার ১৫ দিন আগে মামলার ১ নম্বর আসামি মনিরুল ইসলাম ভূইয়ার বাড়ি থেকে ঘুড়ি বানানোর জন্য পত্রিকা নিয়ে আসে তার ছেলে পলাশ।

সারাদিন পলাশ তার সন্তানদের সঙ্গেও ঘুড়ি ওড়ায়। হঠাৎ মনিরুলের বাড়ি থেকে স্বর্ণ ও টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান কাগজপত্র চুরি হয়ে যায়। পরে গত ৩ জানুয়ারি পলাশকে তারা ধরে নিয়ে মারধর করেন এবং মালামাল চুরি করে তার মায়ের কাছে নিয়ে জমা দিয়েছে, এ ধরণের কথা বলতে বাধ্য করেন। তা না হলে তার মাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন অভিযুক্তরা। ভয়ে পলাশ স্বীকারোক্তি দেয়।

পরে গত শনিবার মামলার ৪ এবং ৫ নম্বর আসামি সন্ধ্যা রানীর বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তাকে বাড়ি থেকে ধরে এনে করিম ভূইয়ার বাগানে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। এসময় মামলায় উল্লেখিত ৫ আসামি সেই নারীকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

সেই ঘটনায় মামলা করা হলে আসামিরা তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলে জানান সন্ধ্যা রানী।

মামলার আসামি মোস্তফা ভূইয়া বলেন, ‘আমার ছোট বোনের গহনা চুরি করে সন্ধ্যা রানীর ছেলে পলাশ। সে চুরি করা গহনা তার মায়ের কাছে জমা দেয়। বারবার চাইলেও তারা দেয় না। তাই আমার ছোট বোন সুমি সন্ধ্যা রানীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। আমরা কিছু জানিনা।’

প্রত্যেক্ষদর্শী মহানন্দ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘প্রায় ৪ ঘণ্টা ভুক্তভোগীকে বেঁধে রাখা হয়। সন্ধ্যা রানীর ৬ মাসের শিশু বাচ্চা কান্না করছিল, এর মাঝে বাচ্চাটাকে তারা তার মায়ের বুকের দুধও খেতে দেয়নি। পরে দুই বন্ধুর সহযোগিতায় সন্ধ্যা রানীকে উদ্ধার করি। তিনি এখন আমার বাড়িতে আছেন।’

বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাগরদিঘি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বর্মন এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করেন। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘এটি অবশ্যই মানবাধিকার লঙ্ঘন। সাধারণত গরিব মানুষ, অসহায়, আদিবাসী হলে তারা খুব অসহায় থাকে।

সমাজের ধনী মানুষগুলো তাদের ওপর জুলুম-অত্যাচার করে নোংরা আনন্দ পায়। নারী ও শিশুর প্রতি তারা সহিংসতা , মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আইন হাতে তুলে নিয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’ এ ব্যাপারে ঘাটাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ছাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার তদন্ত কাজ চলছে। আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।‘

সান নিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ঈদের পরে পর্যটন কেন্দ্রের হালহাকিকাত

বিনোদন প্রতিবেদক: রমজান মাসে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ছিল প্রায় সুনসান নীরব...

বিমসটেক সম্মেলনের পথে প্রধান উপদেষ্টা

সান ডেস্ক: এশিয়ার শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণে বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ...

সমাজে এখনও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা যায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল এ...

শপথ নিলেন আপিল বিভাগের দুই বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসে...

স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা