বগুড়া প্রতিনিধি:
প্রচন্ড জ্বর, মাথাব্যথা যখন শুরু হয়, তখন প্রতিবেশিদের কাউকে পাওয়া যায়নি কোন প্রকার সহায়তায়। করোনার উপসর্গ মনে করে বিভিন্ন হট লাইনে কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। তারপর বিনা চিকিৎসাতেই ৫০ বছর বয়সী মানুষটির যখন মৃত্যূ হল, জানাযা বা দাফনের জন্য এলাকার কোন লোককে পাওয়া গেল না। এ ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দাড়িদহ গ্রামে।
হৃদয়বিদারক এই ঘটনার কথা ফেসবুকে জানিয়েছেন বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার কুদরত এ খুদা। তিনি তাঁর স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘একটি লাশ দাফন করে এভাবে স্ট্যাটাস দিয়ে জানাতে হবে তা কখনো ভাবিনি। মানুষের মাঝে মানবিকতা জাগাতে এতটা গলদঘর্ম হতে হবে, তা কখনো জানা ছিল না। সকাল থেকেই নানা বাধা-বিপত্তি আর নানা নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে আজ রাত পৌনে ৮টার সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ সাপেক্ষে পুলিশের উদ্যোগেই লাশের দাফন সম্পন্ন করা হলো।’
শুধু যে মানুষ পাওয়া যায়নি তা নয়, দাফনে বাধা দেয়া প্রসঙ্গেও তিনি লিখেছেন, ‘দাফন কাজে বাধা দেওয়ার খবর শোনা মাত্রই এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য অতিরিক্ত দুই প্লাটুন স্পেশাল আর্মড ফোর্স প্রেরণ করা হয়। কয়েকজন দুষ্ট লোক এলাকায় ভুল বুঝিয়ে কয়েক হাজার লোক জড়ো করেন! শিবগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান মানুষকে বুঝিয়ে ঘরে ফেরান। কিন্তু কবর খোড়ার লোক কোথায়? শিবগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোস্তাফিজ আর এসআই আহসান আরো দুইজনকে সাথে নিয়ে শুরু করেন কবর খুড়তে। অবশেষে লাশ দাফন হলো! একজন ব্যক্তি পেল তার মৃতদেহের সঠিক মর্যাদা। আমরা দূর থেকে দাঁড়িয়ে দোয়া পড়লাম।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে এক ভাড়াবাসায় মারা যান কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের এই বাসিন্দা। তার মৃত্যুর পর ওই বাড়িটিসহ আরও ৯টি বাড়ি লক-ডাউন করে রেখেছে প্রশাসন।