নিজস্ব প্রতিনিধি, যশোর : সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খালেদুর রহমান টিটো মারা গেছেন। খালেদুর রহমান টিটোর বড় ছেলে মাশুক হাসান জয় জানান, কিছুদিন ধরে তার বাবা অসুস্থ ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) তাকে যশোরের সিএমএইচে ভর্তি করা হয়।
রোববার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ)আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১টা ১৯ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি কিছুদিন যাবত বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
মাশুক হাসান জয় আরও জানান, হাসপাতাল থেকে মরদেহ শহরের ভোলাট্যাংক রোডের বাসভবনে নেয়া হবে। এরপর জানাজা ও দাফনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১৯ নভেম্বর তিনি নিজ বাসভবনে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরদিন এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর ধরা পড়ে তার ফুসফুসে পানি জমেছে।
সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়ার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর বাড়িতেই তার চিকিৎসা চলছিল। কয়েক দিন আগে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সেখান থেকে তাকে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানে আইসিইউতে ছিলেন।
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ খালেদুর রহমান টিটো ১৯৪৫ সালের ১ মার্চ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম এডভোকেট হবিবুর রহমান। মাতা মরহুম করিমা খাতুন।৭ ভাই-বোনের মধ্যে টিটো দ্বিতীয়। ১৯৭২ সালের ১৮ মে যশোর শহরের চুরিপট্টি এলাকার মেয়ে রওশন আরা বেগম বিন্তকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তিনি তিন পুত্র সন্তানের জনক। ২০০৭ সালে তার স্ত্রী মারা যান।
সেই বছরের মার্চ মাসে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি আবার ভারতে চলে যান। বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে সেখানে তিনি শান্তিতে থাকতে পারেননি আবার পূর্ব পাকিস্তানেও ঢুকতে পারতেন না। ১৯৭৪ সালের প্রথম দিকে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে (ভাসানী-ন্যাপ) যোগদান করেন। ৭৪ সালেই ন্যাপের জেলা সম্পাদকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
২০০৬ সালে খালেদুর রহমান টিটো আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০০৮ সালের ২৯ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
খালেদুর রহমান টিটোর বাল্যশিক্ষা শুরু হয় যশোর জিলা স্কুলে। ১৯৬০ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকার কায়েদে আজম কলেজ থেকে ইন্টার মিডিয়েট পাস করেন। ১৯৬৭ সালে কারাগারে অবস্থানকালে যশোর এম. এম. কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেন।
সান নিউজ/এসএ/এস