কামরুজ্জামান স্বাধীন, উলিপুর ( কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌর শহরে বাইপাস সড়ক না থাকায় শহরের প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে জ্যাম লেগেই আছে। প্রতিদিন নতুন নতুন বৈদ্যুতিক ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা, রিক্সা, ট্রাক্টর রোডে নামছে, সড়ক সংকুলান অবস্থায় যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও গাড়ি মোড় নিতে গিয়ে জ্যামের সৃষ্টি হচ্ছে। অধিকাংশ চালকই মানছে না ট্রাফিক আইন।
যতই দিন গড়াচ্ছে ততই মানুষের কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন হচ্ছে। করোনার মহামারিতে চাকরি চলে গেছে অনেক মানুষের। বেঁচে থাকার তাগিদে কৃষি পেশা ছেড়ে দিয়ে ধার-দেনায় ক্রয় করছে বিদ্যুতায়িত অটোরিক্সা, রিক্সা। ব্যাটারিচালিত গাড়ির শহরে পরিণত হয়েছে উলিপুর পৌর শহর।
ব্যবসা-বাণিজ্যের মান পরিবর্তন করে অনেকেই ডিলার ব্যবসায় নেমেছে, কোম্পানির রোডে গাড়িগুলোর দাড়াবার জায়গা না থাকায় সকাল থেকে রাতভর পর্যন্ত যত্রতত্র গাড়িগুলো দাড়িয়ে পণ্য খালাশ করছে।পৌর কর্তৃপক্ষের দেয়া ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকলেও রোডে গাড়ি চালকদের সাথে প্রতিদিনই ছোট-বড় ঝগড়া বেধেই আছে।
পৌর কর্তৃপক্ষের দেয়া ট্রাফিক পুলিশ লালমিয়া জানান, সারাদিন গায়ে গতোরে খাটি এই জ্যাম নিয়া হামার কিছু করার নাই।
সরকারিভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকলেও শক্ত ব্যবস্থা নিতে পারছে না। শহর ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণ পুলিশ পরিদর্শক আলতাফ জানালেন, বাইপাস সড়কের ব্যবস্থা না করলে কোনভাবেই জ্যাম থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব না।
সংকুলান সড়কের পাশেই বড় মসজিদের সামনে প্রতিদিন সকাল-বিকেল মাহিন্দ্র কোম্পানির গাড়িগুলো ফুটপাতের রেলিংয়ের পাশেই দাড়িয়ে থেকে জ্যামের সৃষ্টি করছে। সাম্প্রতিক সময়ে শহরে সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত ট্রাক্টর প্রবেশ করবে না মুলে যে আইন করা হয়েছে সে আইনটিও মানছে না অধিকাংশ ট্রাক্টর মালিক।
প্রতিদিন শহরে প্রায় এক হাজার অটোরিক্সা চলাচল করছে। উলিপুর জিরো পয়েন্ট থেকে সদর হসপিটাল রোড, পোষ্ট অফিস মোড় থেকে মতিন কারিগরি পর্যন্ত, থানা মোড় থেকে গো হাটি পর্যন্ত এবং সরকারি বালিকা বিদ্যালয় রোডে জ্যাম লক্ষ করা যাচ্ছে।
এ্যাম্বুলেন্স চালক মন্টু বলেন, গুরুতর অসুস্থ রোগী নিয়ে সব সময় ঝামেলায় পরতে হয়, মাঝে মাঝেই পাঁচ মিনিটের জায়গায় ত্রিশ মিনিট লেগে যায়। শহরের সড়কের এক ধারে রেলিং, আরেক ধারে গাছ থাকলেও কলার দোকান ও জুতার দোকানরা সেসবের পার্শ্ব দিয়েই জেকে বসায় ছাড়ছে না জ্যাম।
এছাড়াও ড্রেনের উপর অনেক দোকান মালিকই বারান্দা দেয়ায় সাধারণ জনগণের চলাফেরায় প্রতিদিন ব্যাঘাত ঘটছে।
এদিকে শহরের ভিতরে বৈদ্যুতিক পোলগুলোর ডানে-বামে জায়গা থাকলেও সেখানে চলন্ত গাড়িগুলো তাদের দাড়ানোর জায়গা নিতে পারছে না।
কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পল্লী বিদ্যুতের আওতায় উলিপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম নাসির উদ্দিন জানান, জাইকা প্রকল্পের কাছে ডিজাইন দেয়া আছে সড়ক বৃদ্ধির কাজ শুরু হলেই পোলগুলো দেড়-দুই ফুট সরানো হবে।
উলিপুর বণিক সমিতির সভাপতি সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবা জানান, যেহেতু সংকুলান সড়ক সেহেতু শহরের যততত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রিসেবা না দিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি থামিয়ে সেবা দিতে হবে এবং দ্রুতই বাইপাস সড়কের ব্যবস্থা করতে না পারলে সামনে এর চেয়েও খারাপ অবস্থা দেখতে হবে।
পৌর মেয়র তারিক আবুল আলা চৌধুরী জানান, নির্বাচিত হওয়ার পর শহরের সংকোচিত সড়কগুলো ফুটপাত দখলমুক্ত করে প্রশস্থ করেছি এবং আটজন পৌর ট্রাফিক পুলিশ দিয়েছি তাতেও জ্যাম ছাড়ছে না। বাইপাস সড়কের কাজ এত দ্রুত সম্ভব না।
সান নিউজ/কেএস/এনকে