রেজাউল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : 'নদীর এপার ভাঙে ওপার গড়ে এইতো নদীর খেলা সকাল বেলার ধনীরে তুই ফরিক সন্ধ্যা বেলা'- এই প্রতিপাদ্য এবং গানের কথার বাস্তব চিত্র দেখা দিয়েছে বহুরূপী তিস্তার।
ভাঙনে তিস্তার এক প্রান্তে বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে এবং অপর প্রান্তে পানি শুকে গিয়ে বালুচরে পরিণত হয়েছে। চলছে না নৌকা, হাঁটু পানি পারি দিয়ে ঘোড়ার গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনে পারপার হতে হচ্ছে কষ্ট করে। এতে বেকার হয়ে পড়েছে হাজারও নৌ-শ্রমিক অপরদিকে ভাঙনে ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে চরবাসী।
উজান থেকে পলি জমে রাক্ষুসী পাগলা তিস্তা নদী এখন বালু চরে এবং আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। সে কারণে তিস্তা এখন অসংখ্য শাখা নদীতে পরিণত হয়েছে। যার কারণে এক পার ভাঙছে এবং ওপার গড়ছে। এ জন্য নৌ-শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়ছে।
বেলকা চরের একরামুল হক লাল মিয়া জানান, বেলকা চরে বেশ কয়েকটি শাখা নদী শুকে গেছে। চলছে না নৌকা। পায়ে হেঁটে পারাপার করতে হচ্ছে। চরে নানাবিধ ফসলের সমাহার দেখা দিয়েছে।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের ভাটি কাপাসিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, তিস্তার লাগামহীন ভাঙনে বেসামাল হয়ে পড়েছে চরবাসী। ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি বিলীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জানান, নদী ড্রেজিং এবং খনন করা ছাড়া নদীভাঙন রোধ করা কোনভাবে সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন ধরে পলি জমে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। নদীভাঙন ঠেকাতে হলে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান, কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে নদী ভাঙনের কারণে ভুট্টাসহ নানাবিধ ফসল নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এতে চরের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল মারুফ জানান, তিনি সদ্য এই উপজেলায় যোগদান করেছেন। নদী ভাঙনের বিষয়টি তার জানা নাই। চেয়ারম্যানের নিকট জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান জানান, নদীভাঙন রোধ একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা। তবে নদী সংরক্ষণের ব্যাপারে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে।
সান নিউজ/আরআই/কেটি