বগুড়া প্রতিনিধি:
"রাতভর হটলাইনগুলোতে একের পর এক ফোন দিয়ে সারা পাইনি। পাওয়া যায়নি সরকারি হাসপাতালগুলোর এম্বুলেন্স। করোনা হয়েছে সেই আতঙ্কে পড়শিরাও কেউ এগিয়ে আসেনি। কোন ভাবেই একা স্বামীকে হাসপাতালে নিতে পারিনি। রাত সাড়ে এগারোটার দিকে নিস্তেজ হয়ে যায় স্বামীর শরীর। ছোট্ট মেয়েটাকে নিয়ে নিথর দেহের পাশে বসে সারাটা রাত পার করেছি। সে মারা গেছে না বেঁচে আছে বুঝতেও পারিনি।"
এ কথাগুলো বলছিলেন, করোনা ভাইরাস আক্রান্তের উপসর্গ নিয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জে এক মৃত ব্যক্তির স্ত্রী। ওই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা সেটা জানতে মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এরিমধ্যে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার পর ওই এলাকার ১৫টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ওই ব্যক্তি ঢাকার কাশিম বাজারে ব্যবসা করতেন। তার স্ত্রী বেসরকারি সংস্থা টিএমএসএস’এ চাকরি করার কারণে শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের মহব্বত নন্দীপুর গ্রামে ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। তিনি ঢাকায় অবস্থানকালে ২৪ মার্চ থেকে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন।
এ অবস্থায় শুক্রবার (২৭ মার্চ) তিনি শিবগঞ্জে স্ত্রীর বাসায় চলে আসেন। সন্ধ্যার পর তিনি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ কিনে সেবন করেন। পরে ২৮ মার্চ শনিবার ভোরে তিনি মারা যান।
মৃত্যুর পর তার স্ত্রী হটলাইনে ফোন করে ডা. শফিক আমিন কাজলকে বিষয়টি জানান। এরপর শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোরতজা আব্দুল হাই শামীম শনিবার (২৮ মার্চ) সকাল ১০টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, আমরা ইতিমধ্যে ঢাকায় কথা বলেছি। মরদেহ থেকে নমুনা হিসেবে লালা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর’এ পাঠানো হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবীর জানান, করোনা সন্দেহে ওই বাড়িসহ পার্শ্ববর্তী ১৫টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অবস্থান করছেন।
সান নিউজ/সালি