শরীফ ইকবাল রাসেল, নরসিংদী: এবারের পৌর নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেলার মনোহরদী পৌরসভার নির্বাচন। নির্বাচনে মনোহরদী পৌরসভার ১৩ হাজার ৭৯৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
২০০২ সালে মনোহরদী পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এবার প্রথম ইভিএমের মাধ্যমে ভোটাররা পৌর মেয়র নির্বাচন করবেন। দেশের বৃহত্তম দুটি রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীসহ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট চার জন প্রার্থী।
নির্বাচনকে ঘিরে পৌরবাসীর মনে প্রশ্ন, কে হচ্ছেন ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণে মধ্য দিয়ে মনোহরদী পৌরসভার পৌর মেয়র। জনগণের মনের এই প্রশ্নের সমাধানের জন্য ইতিমধ্যে সকল প্রার্থীগণ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মনোহরদী পৌরসভায় মোট ভোটার ১৩ হাজার ৭৯৮ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৫৮০ জন এবং মহিলা ভোটার ৭ হাজার ২১৮ জন। নির্বাচনে মোট ৯টি ভোট কেন্দ্রের ৪০টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন, নৌকা প্রতিক নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ আমিনুর রশিদ সুজন, ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক মো. মাহমুদুল হক, হাতপাখা প্রতিক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী আবদুল মান্নান ও মোবাইল ফোন প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক মেয়র আলফাজ উদ্দিনের ভাতিজা ইমরান আহমেদ নির্বাচন করছেন।
এছাড়া ৯ টি ওয়ার্ডে মোট ৩০ জন প্রার্থী কাউন্সিলর এবং ৩টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রার্থীদের ছবি এবং প্রতীক সম্বলিত পোষ্টার টানানো হয়েছে পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক, মোড় এবং বাজারে। টানানো হয়েছে ব্যানার। দিন রাত সমানতারে প্রার্থীরা ছুটে চলেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ভোট প্রার্থনাসহ দিচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি। পাড়া-মহল্লা এবং বিভিন্ন মোড়ে চায়ের কাপে ধোয়া তুলতে তুলতে প্রার্থীদের নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনাসহ ভোটের হিসাব কষছেন সাধারণ ভোটারা। সব মিলিয়ে মনোহরদী পৌরসভার নির্বাচনী গরম হাওয়া পৌষের শীতকে পরাজিত করেছেন বলে অনেকে মনে করেন।
আসন্ন পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ ভোটাররা ভাবছেন উন্নয়নের কথা। পৌর উন্নয়ন আর সাধারণ নাগরিক সুবিধা যাদের কাছ থেকে পাবে তাদেরকেই তারা ভোট দেওয়ার কথা ভাবছেন ।
এ বিষয়ে ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আলতাব হোসেন জানান, উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে এবং সুখে দুঃখে যাকে কাছে পাবো তাকেই ভোট দিব।
এদিকে, ভোটারদের চাহিদা অনুযায়ী পৌরসভার সকল নাগরিকদের সাধারণ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির কথা দিয়ে ভোট চাচ্ছেন মেয়র প্রার্থীগণ।
আ.লীগ থেকে মনোনীত বর্তমান মেয়র আমিনুর রশিদ সুজন জানান, প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এ লকডাউনের সময় কর্মহীন অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছি। এবারও নির্বাচনে বিজয়ী হলে উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখব ইনশাআল্লাহ।
বিএনপি থেকে মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হক বলেন, অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ইমরান আহমেদ বলেন, ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। বেশ সাড়া পাচ্ছি। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তবে আগামী ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে নৌকার সাথে ধানের শীষ প্রতীকেরই মূল লড়াইটা হচ্ছে বলে মনে করেন সাধারণ ভোটারগণ।
কেননা দেশে এখনো শক্ত অবস্থানের দল দেশে দুটিই আছে বলে মন্তব্য করেন সচেতন মহল।
সান নিউজ/কেটি