নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন সীতারামের দীঘি ভরাট করার অভিযোগ এবং জলাশয়টির মালিকানা দাবির বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। স্থানীয় জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালককে এ বিষয়ে তদন্ত করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (৪ জানুয়ারি) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদেশে ওই দীঘি ভরাট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এসএ ও আরএস পর্চা ম্যাপ অনুসারে দীঘিটি পূর্বের অবস্থায় কেন ফেরত নেয়া হবে না এবং দীঘিটির চারপাশে পিলার দিয়ে কেন সৌন্দর্য বর্ধন করে সংরক্ষণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাসান তারিক পলাশ। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী আরিফ আহমেদ।
এর আগে বরিশাল নগরীর সবচেয়ে বৃহৎ ও দুই শতাধিক বছরের প্রাচীন জলাধার বালি দিয়ে ভরে ফেলা এবং সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের মালিকানা দাবি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বরিশাল নগরীর সবচেয়ে বৃহৎ ও দুই শতাধিক বছরের প্রাচীন জলাধার বালি দিয়ে ভরে ফেলছে জমির মালিকানা দাবি করা সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান। ইতোমধ্যে ট্রাকে করে বৃহৎ এই জলাধারের কিয়দাংশ ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এত বড় জলাধার বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন বাধা দিলেও চুপিসারে প্রতিনিয়ত ভরে ফেলা হচ্ছে এই সম্পদ। জলাধারের কাগজপত্রে এটি সীতারামের দীঘি, পানীয় জলের জন্য সাধারণের ব্যবহার্য— এই কথাটি উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত বালি দিয়ে ভরে হচ্ছে এই প্রাচীন ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ।’
এতে আরও বলা হয়, ‘বরিশাল নগরীর ২৯ ওয়ার্ডের আওতাধীন কাশীপুর বাজার ছাড়িয়ে গেলে চোখে পড়বে বৃহৎ আকারের এই দীঘিটি। স্থানীয়ভাবে দীঘিটি সীতারামের দীঘি নামে সুপরিচিত। এক সময়ে চন্দ্রদ্বীপ রাজবংশ অন্তরগত এই ২.৯৮ একরের দীঘি ছাড়াও ১.৩৯ একর জায়গায় স্থাপিত হয়েছে ইউনিয়ন ভূমি আফিস, যা একটি বৃহদাকার ভবন নিয়ে গঠিত।’
প্রতিবেদন সংযুক্ত করে বরিশালের বিভাগীয় পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন নাগরিক অধিকারের পক্ষে অ্যাডভোকেট সাইমুল ইসলাম রাব্বী হাইকোর্টে রিট করেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে এ রিট করা হয়।
এর আগে গত ৬ জুন দীঘির ভরাট রোধে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু ওই নোটিশের পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় হাইকোর্টে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আজ এই আদেশ দেয় আদালত।
সান নিউজ/এমএ/এস