নিজস্ব প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বশির আহাম্মদ মানিক ২ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষণের অভিযোগ ও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে এ মামলা করা হয়।
এতে মামলা দায়েরকারী তরুণীকে প্রধান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুল হক টিপুসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। রোববার বিকালে মানিকের আইনজীবী নজরুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, চেয়ারম্যান মানিক বলছেন, আমি রাজনৈতিক কোন্দলের শিকার। তরুণীর চাচা ইয়াবা সম্রাট হিসেবে পরিচিত। তাকে গ্রেফতারের দাবিতে আমি মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ভাতিজিকে দিয়ে তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। একই সঙ্গে মানহানি মামলার আসামিদের দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে সুনাম ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।
আইনজীবী নজরুল ইসলাম জানান, ধর্ষণের অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যান মানিকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে সুনাম ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। গত ৮ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে (রামগঞ্জ) ১৯ জনের নামে মানহানি মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক রায়হান চৌধুরী মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বশির আহাম্মদ মানিকের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২২ মার্চ ১৯ বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মানিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন। ঘটনার ৪ মাস পর ২২ জুলাই মামলাটি করা হয়। এছাড়া একটি চক্র মামলার ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। এতে মানিকের শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
মামলাটি তদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সিআইডিকে নির্দেশ দেয় আদালত। গত ১০ নভেম্বর সিআইডির পরিদর্শক মাসুকুল আলম ও উপ-পুলিশ পরিদর্শক আশরাফ উদ্দিন সরদার আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে ঘটনাটি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে প্রমাণিত হয়।
সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন সূত্র জানায়, মানিকের বাড়িতে কোনো নারী গৃহকর্মী নেই। ধর্ষণের অভিযোগ আনা তরুণীর মা কখনো চেয়ারম্যানের বাড়িতে কাজ করতেন না। তরুণীর চাচা রিপন ঘটনার দিন বিষয়টি জানতে পেরেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়া রহস্যজনক।
মামলায় তরুণী ঘটনার দুই মাস পর বিষয়টি সবাইকে জানানোর কথা বললেও সাক্ষীরা ঘটনার দিনই জেনেছেন। মামলায় লকডাউনে রামগঞ্জ থানার গেট বন্ধ করার কথা উল্লেখের বিষয় অসত্য বলে জানান ওসি আনোয়ার হোসেন।
এদিকে, গত ২৯ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী লক্ষ্মীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুদৌলাহ কুতুবী ধর্ষণ মামলার অভিযোগটি নাকচ করে দেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবুদল কাদের ভূঁইয়া সই করা পত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
জানতে চাইলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি একেএম ফজলুল হক বলেন, মানহানি মামলার তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশনা পেয়েছি। তদন্ত চলছে। যথাসময়ে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।
সান নিউজ/জেইউবি/কেটি