মো. শামীম রেজা, মানিকগঞ্জ: শীতকালীন টাটকা সবজি বাজারে দ্রুত পৌঁছে দিতে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে বসেছে রাতের আড়ত। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে হরেক রকম সবজিতে ভড়ে ওঠে আড়তটি। এখান থেকে সবজি কিনে ঢাকাসহ বিভিন্ন বাজারে রাতেই পৌঁছে দেন পাইকাররা। আড়তে বেচাকেনা ভালো হওয়ায় খুশি চাষি ও পাইকাররা।
সিঙ্গাইরের তালেবপুর ইউনিয়নের কাংশা চৌরাস্তায় মাস খানেক ধরে শুরু হয়েছে রাতের এই সবজি আড়ত। আড়তের চারপাশের এলাকাগুলোতে ব্যাপক হারে সবজি চাষ হয়। হাতের নাগালে আড়ত পাওয়ায় পরিবহন খরচ এবং সময় দুটোই বাঁচছে চাষিদের। এতে লাভবান হচ্ছেন তারা। আড়তে বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হয় ডাকের মাধ্যমে।
সরেজমিন আড়তে গিয়ে দেখা যায়, ভ্যান গাড়ি, টেম্পু, ট্রলি, রিকশাসহ নানা যানবাহনে করে আড়তে সবজি আনছেন চাষিরা। বিকেল থেকে সবজি আসা শুরু হলেও, বেচাকেনা শুরু হয় সন্ধ্যার পর থেকে। সন্ধ্যা যতই ঘনিয়ে আসে আড়ত ততই জমে ওঠে। রাত ১০টা থেকে ১১টা পযন্ত চলে বেচাকেনা।
লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, শিম, ফুলকপি, মুলা, ধুনেপাতা, লাল শাক, পালং শাক, করল্লা, টমেটো, গাজর, ওলকপিসহ শীতকালীন প্রায় সব সবজিই পাওয়া যায় এখানে। প্রতি কেজির দাম ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। আড়তে প্রচুর পরিমাণে ওঠে পাতা পেঁয়াজ। আড়তে দামে সাশ্রয় আর টাটকা শাক-সবজি কিনতে রাতে ঢাকা,গাজিপুরসহ আশপাশের এলাকার পাইকাররা ভিড় করেন। রাতেই এই সবজি তারা পৌঁছে দেন বিভিন্ন আড়ত ও বাজারে।
কথা হয় সবজি চাষি রহিম, আনোয়ার, জাহাঙ্গীর ও কফিলের সঙ্গে। তারা জানান, বাড়ির পাশেই আড়ত হওয়ায় তাদের সুবিধা অনেক। আগে ঢাকা অথবা অন্য কোথাও সবজি পাঠাতে তাদের অনেক খরচ হতো। এখন পাইকাররাই তাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাই তাদের খরচ কমে লাভের হার বেড়েছে।
তারা জানান, প্রতিদিন বিকেলে ক্ষেত থেকে সবজি তোলা হয়। রাতে আনা হয় আড়তে। ফলে সবজিও টাটকা থাকে। দামও ভালো পাওয়া যায়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকার ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন এবং মিরপুরের জালাল সান নিউজকে জানান, প্রতিদিন রাতে এই আড়তে আসেন তারা। দামে সাশ্রয় আর টাটকা শাক-সবজি মেলায় পাইকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। এখান থেকে নেয়া সবজিগুলো ঢাকার কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ি, মিরপুর, গাজীপুর, সাভারসহ বিভিন্ন বিক্রি করেন।
তালেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রমজান আলী জানান, সিঙ্গাইর উপজেলা সবজি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। বিশেষ করে কাংশা এলাকায় প্রচুর পরিমাণে সবজি উৎপাদন হয়। চাষিদের দুর্ভোগ, হয়রানি বন্ধ এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক উদ্যোগ নিয়ে এই আড়ত করেছেন। এর ফলে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আড়তে বেচাকেনা ভালো হওয়ায় ক্রেতা এবং বিক্রেতা সবাই খুশি।
সান নিউজ/কেটি