চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশব্যাপী চলছে অঘোষিত লকডাউন। এ লক্ষ্যে সারাদেশে সেনাবাহিনী সদস্যদের সঙ্গে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ বাহিনী। অলি-গলিতে টহল দেয়া ছাড়াও সচেতনতামূলক মাইকিং করে জনগণকে তারা সতর্কও করছেন। এমনকি প্রয়োজনে পাশে থাকার কথা বলছেন তারা।
চট্টগ্রামের কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসিন নিজে মাইকিং করে নগরবাসীর উদ্দেশে বলছেন, আপনারা ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। কোনো প্রয়োজনে ৬১৯৯২২ এই নম্বরে কোতয়ালী থানায় ফোন করে সহায়তা নিন। আপনারা ঘরে থাকুন, আমরা আপনার প্রয়োজনে চলে আসব, আপনার প্রয়োজন পূরণ করব।
পুলিশের এ আহ্বানে ঘোষিত নম্বরে ফোন করেন এক নারী। তিনি জানান, তার স্বামী একজন জাহাজের ক্যাপ্টেন। সম্প্রতি জাহাজ থেকে ফেরার পর তিনি সেলফ কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এ অবস্থায় তার পরিবারের বাজার-সদাই করা খুব প্রয়োজন। কিন্তু লকডাউনের কারণে তিনি বাসা থেকে বের হতে পারছেন না।
সমস্যা শুনে টিম কোতয়ালীর এক পুলিশ সদস্য গিয়ে ওই নারীকে প্রয়োজনীয় বাজার করে দেন। পুলিশের এমন মানবিক আচরণে বিস্মিয় প্রকাশ করেছেন ওই গৃহবধূ।
বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) চট্টগ্রাম নগরের কোতয়ালী থানা মিরিন্ডা লেইনে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে গৃহবধূ রেবেকা সুলতানা বলেন, আমিতো অবাক! এদেশে এমনও হয়! সাহস করে ফোন দিলাম থানায়, বললাম, লকডাউনের কারণে বের হতে পারছি না, কিন্তু আজ বাজার করা খুব প্রয়োজন। বিশ্বাস করুন মাত্র ৩০ মিনিটেই তারা আমাকে বাজার করে এনে দিয়েছেন। গত দুইদিন একেবারে বের হইনি। ভয় হচ্ছিল পুলিশ যদি লাঠিপেটা করে। অথচ সেই পুলিশই আমাদের বাজার করে দিল!
এ সময় তিনি জানান, ওই পুলিশ সদস্য মাছ ও নানা ধরনের সবজি মিলিয়ে ১১শ টাকার বাজার করে দিয়েছেন।
কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসিন বলেন, মিরিন্ডা লেনের মিসেস রেবেকা সুলতানা আমাদের হেল্প লাইনে ফোন করে জানান, তার স্বামী আজাহারুল ইসলাম করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকায় সেলফ কোয়ারেন্টাইনে আছেন। বাসায় আর কোনো পুরুষ মানুষ নেই। এই লকডাউনে দুই মেয়ে নিয়ে তিনি অসহায় অবস্থায় আছেন। বাজারে যেতে পারছেন না। খবর পেয়ে আমি এক পুলিশ সদস্যকে তার বাসায় পাঠাই। পরে সেই পরিবারের প্রয়োজন অনুযায়ী বাজার-সদাই করে দেয়া হয়েছে।
সান নিউজ/সালি